রংপুরের পীরগাছায় তিন মিনিটের টর্নেডোতে ১৫ গ্রামের ১২ শতাধিক ঘরবাড়ি বিধ্বস্ত হয়েছে
মোঃ সাকিব ইসলাম, রংপুর
এ সময় নারী ও শিশুসহ আহত হয়েছেন অন্তত ২০ জন।
মঙ্গলবার (১৬ মে) সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে উপজেলার কান্দি ইউনিয়নের ওপর টর্নেডো আঘাত হানে। তার আগের দিন সোমবার রাত সোয়া ১০টার দিকে কালবৈশাখী ঝড়ে আংশিক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছিল ওই ইউনিয়নের গ্রামগুলো।
সরেজমিনে গিয়ে জানা যায়, সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে আকস্মিক ঝড় শুরু হয়। লোকজন কিছু বুঝে ওঠার আগেই মাত্র তিন মিনিটে সবকিছু লণ্ডভণ্ড হয়ে যায়। বেশির ভাগ কাঁচা ঘরবাড়ি ধসে পড়ে যায়। প্রতিটি গ্রামে উপড়ে পড়ে যায় শতশত গাছ। তিনটি বিদ্যুতের খুঁটি ভেঙে ও বিভিন্ন এলাকায় গাছের ডাল পড়ে তার ছিঁড়ে বিদ্যুৎ-সংযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে গেছে। ঝড়ের পাশাপাশি শিলাবৃষ্টিতে ধান, ভুট্টা, কলা, আম ও লিচুসহ বিভিন্ন মৌসুমি ফলেরও ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে কান্দি ইউনিয়নের কাবিলাপাড়া, বাঘমারা, মাঝবাড়ি, দোয়ানী, নিজপাড়া, দাদন, দেয়ানী, মনিরামপুর, দিগটারী, পূর্ব পাঠক শিকড় গ্রাম। এতে কাবিলাপাড়া গ্রামের ফুরফুরি বেগম ও সাহেদা বেগম গুরুতর আহত হয়।
ঝড়ে কান্দিরহাট স্কুল অ্যান্ড কলেজের একটি ভবন ধংসস্তুপে পরিণত হয়। ঘরের চাল ভেঙে মাটি পড়ে যায়। এতে প্রতিষ্ঠানটির প্রায় ২০ লাখ টাকার ক্ষতি হয়েছে বলে জানান অধ্যক্ষ এবিএম মিজানুর রহমান।
ক্ষতিগ্রস্তরা জানান, তিন মিনিটের ঝড়ে তাদের সবকিছু লণ্ডভণ্ড হয়ে গেছে। অনেকে খোলা আকাশের নিচে আশ্রয় নিয়েছেন।
কান্দি ইউপি চেয়ারম্যান আব্দুস ছালাম আজাদ জুয়েল বলেন, ঝড়ে কান্দি ইউনিয়নের সহস্রাধিক পরিবার ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। প্রায় বাড়ির কাঁচা বসতঘর লণ্ডভণ্ড হয়ে গেছে।
পীরগাছা উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা আব্দুল আজিজ বলেন, ক্ষতিগ্রস্তদের তালিকা তৈরি করে সব ধরনের সহযোগিতা করা হবে।
রংপুর পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি-১ পীরগাছা জোনাল অফিসের ডিজিএম মোজাম্মেল হক বলেন, আগের দিনে ঝড়ে অন্তত ৩৫টি স্থানে বৈদ্যুতিক খুঁটি পড়ে গেছে। সেগুলো পরিবর্তনের কাজ চলছে। এরই মধ্যে নতুন করে কান্দিতে কয়েকটি স্থানে খুঁটি ভেঙে ও তার ছিঁড়ে বিদ্যুৎ-সংযোগ বিচ্ছিন্ন হয়েছে।
পীরগাছা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মুসা নাসের চৌধুরী বলেন, ক্ষতিগ্রস্ত এলাকা পরিদর্শন করে দ্রুত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।