মঙ্গলবার , ২রা জুলাই, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ || ১৮ই আষাঢ়, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ - বর্ষাকাল || ২৬শে জিলহজ, ১৪৪৫ হিজরি

কর্মক্লান্ত মানুষের সজীবতার জন্য প্রয়োজন বিশ্রাম ও বিনোদন

প্রকাশিত হয়েছে- বৃহস্পতিবার, ২৭ জুন, ২০২৪
কর্মক্লান্ত মানুষের সজীবতার জন্য প্রয়োজন বিশ্রাম ও বিনোদন
স্টাফ রিপোর্টার
কর্মক্লান্ত মানুষের আত্মিক ও মানসিক সজীবতার জন্য প্রয়োজন বিশ্রাম ও বিনোদন। আনন্দ ও চিত্তবিনোদন মানুষকে প্রশান্তি দেয় এবং মনকে সুস্থ ও সতেজ রাখে। ইসলাম চায় একজন মানুষ প্রফুল্ল চিত্তে আল্লাহ তায়ালার ইবাদত-বন্দেগি করবে। অন্যদিকে হীনমন্যতা, বিষণ্নতা, আনন্দহীনতা ও দুর্বলতাকে অপছন্দ করা হয়েছে। মানুষের শারীরিক ও আত্মিক চাহিদার প্রতি সবিশেষ গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে। ইসলাম মনে করে, একটি সফল জীবনের জন্য প্রশান্তি ও প্রফুল্লতা থাকা জরুরি। পবিত্র কোরআনে ইরশাদ হয়েছে, ‘আল্লাহ তোমাদের জন্য সহজসাধ্যতা চান। তিনি তোমাদের জন্য কঠোরতা চান না।’(সুরা বাকারা )
মানুষের শরীরের জন্য যেমন বিভিন্ন ধরনের খাদ্য ও ভিটামিন জরুরি তেমনি তার আত্মার জন্যও বিনোদন জরুরি। অনেক মনোবিজ্ঞানী বলছেন, চিত্তবিনোদন, হাসি-খুশি ও প্রফুল্লতা বিভিন্ন ধরনের রোগ প্রতিরোধ করে এবং শরীরে নানা ধরনের ক্যানসার দ্রুত ছড়িয়ে পড়াকেও ঠেকিয়ে রাখে। আল্লাহর রাসুল (সা.) নিজেও শরীরচর্চার অংশ হিসেবে কুস্তি, ব্যায়াম ইত্যাদিতে অংশগ্রহণ করতেন এবং সাহাবায়ে কেরামকেও উৎসাহ দিতেন। হজরত আয়েশা (রা.) থেকে বর্ণিত তিনি বলেন, মদিনায় একবার কিছু কৃষ্ণাঙ্গ যুবক বর্শা নিয়ে খেলছিল। তা দেখে আল্লাহর রাসুল (সা.) তাদের বললেন, ‘খেলতে থাক।’ অন্য বর্ণনায় আছে, ‘বনু আরফিদার বাসিন্দারা! তোমরা খেলাধুলা গ্রহণ কর। যেন ইহুদি-খ্রিস্টানরা জানতে পারে যে, আমাদের ধর্মেও বিনোদন আছে।’ (বুখারি : ৯৫০)
শরীরচর্চা ও খেলাধুলা বিনোদনের অন্যতম মাধ্যম। স্বাস্থ্য সুরক্ষা, রণ নৈপুণ্যের প্রয়োজনে তীর নিক্ষেপ, বর্শা চালনা, দৌড় প্রতিযোগিতা ইত্যাদিকে ইসলাম সমর্থন করে। হাদিসে বর্ণিত রয়েছে, রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেন, ‘ঘোড়া অথবা তীর নিক্ষেপ কিংবা উটের প্রতিযোগিতা ব্যতীত অন্য প্রতিযোগিতা নেই।’ (তিরমিজি : ৫৬৪)। অন্য হাদিসে এসেছে, নবীজি (সা.) বলেন, ‘তোমাদের জন্য তীর নিক্ষেপ শিক্ষা করা কর্তব্য। কেননা, এটা তোমাদের জন্য একটি উত্তম খেলা।’ (ফিকহুস সুন্নাহ : ২/৬০)। ইসলাম নির্দিষ্ট কোনো খেলাধুলাকে জায়েজ বা নাজায়েজ বলে নাই; বরং তিনটি শর্তের সঙ্গে জায়েজ-নাজায়েজের সম্পর্ক। তা হলোÑ ১. ইসলামী শরিয়তের কোনো বিধান লঙ্ঘন না হওয়া। ২. শারীরিক উপকার ও কল্যাণ অর্জন। ৩. আর্থিক ক্ষতিসাধন না হওয়া। এ তিনটি শর্ত যে খেলার মাঝে পাওয়া যাবে তা জায়েজ, অন্যথায় নাজায়েজ হবে।

বিনোদনের জন্য ইসলামী গান; যা কোনো বেগানা মহিলার কণ্ঠে পরিবেশিত হয় না এবং যাতে বাদ্য-যন্ত্র ব্যবহার করা হয় না, সেগুলো শ্রবণ বৈধ। অন্যদিকে বাদ্যযন্ত্র ব্যবহার করে গাওয়া গান শোনা এবং নর্তকীর নাচ উপভোগ করা হারাম ও কবিরা গুনাহ। মহান আল্লাহ তায়ালা পবিত্র কোরআন মাজিদে বলেছেন, ‘এক শ্রেণির লোক আছে যারা মানুষকে আল্লাহর পথ থেকে পথভ্রষ্ট করার উদ্দেশে অবান্তর কথাবার্তা সংগ্রহ করে অন্ধভাবে এবং উহাকে (আল্লাহর পথ) নিয়ে ঠাট্টা-বিদ্রƒপ করে। এদের জন্য রয়েছে অবমাননাকর শাস্তি।’ (সুরা লোকমান : ৬ )