শনিবার , ২৭শে এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ || ১৪ই বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ - গ্রীষ্মকাল || ১৮ই শাওয়াল, ১৪৪৫ হিজরি

নদী থেকে অবৈধভাবে ভাবে বালু উত্তোলনের ফলে যাতায়াতের পাকা রাস্তা ধ্বংস

প্রকাশিত হয়েছে- বুধবার, ১০ মে, ২০২৩

নদী থেকে অবৈধভাবে ভাবে বালু উত্তোলনের ফলে যাতায়াতের পাকা রাস্তা ধ্বংস

মোঃ আব্দুল জব্বার রাণীশংকৈল(ঠাকুরগাঁও) প্রতিনিধি

ঠাকুরগাঁও জেলা বালিয়াডাঙ্গী উপজেলার দুওসুও ৪ নং বড়পলাশবাড়ী ইউনিয়নের মধ্যবর্তী স্থান কুশলডাঙ্গী বাজারে পাশে নদীর উপর নির্মিত ব্রিজের সংযোগ সড়কের দুপাশে ভেঙ্গে গেছে।

আজ থেকে প্রায় ৮ দিন আগে সংযোগ সড়কটি ভেঙ্গে গেলেও সংস্কার না করার ফলে চলাচলে দুর্ভোগে পড়তে হয়েছে উপজেলার দুইটি ইউনিয়নের কয়েক হাজার মানুষকে। সংযোগ সড়কটি দ্রুত সংস্কারের দাবি জানিয়েছেন উক্ত সড়ক ব্যবহার কারী এলাকাবাসী।

স্থানীয়রা জানায়, দীর্ঘদিন ধরে দাবি তোলার পর ৮ বছর আগে তীরনই নদীর এপারে দুওসুও ইউনিয়ন এবং ওপারে বড়পলাশবাড়ী ইউনিয়নের মানুষের সাথে যোগাযোগ এবং কুশলডাঙ্গী বাজারে ব্যবসায়ীদের যাতায়াতের জন্য ৩ কোটি টাকা ব্যয়ে তীরনই নদীর উপর একটি বড়ব্রিজ নির্মাণ হয়। নির্মাণের পর ব্রিজটি দুই ইউনিয়নের মানুষের দুর্ভোগ কিছুটা কমে ছিল। কিন্তু গেল কয়েকবছর ধরে ব্রিজের পাশে অবৈধভাবে স্থানীয় বালু ব্যবসায়ীরা বালু তোলার কারণে ব্রিজটির সংযোগ সড়ক এবং ব্রিজটি ঝুঁকির মুখে পড়েছে।

কুশলডাঙ্গী বাজারের ব্যবসায়ী আমিরুল ইসলাম জানান, গত ৩০ এপ্রিল রাতের বৃষ্টিতে ব্রিজটি পশ্চিম পার্শ্বের সংযোগ সড়কটির দুপাশে ধ্বসে গেছে। একটি ইজিবাইক গেলেও যাত্রী নামিয়ে পার করতে হচ্ছে। ট্রাক্টর এবং অন্যান্য বড় গাড়ীগুলোকে ৮ কিলোমিটার ঘুরে আসতে হচ্ছে বাজারে। এতে দুর্ভোগের যেন শেষ নেই।

পারুয়া গ্রামের আজিজুল হক, নদীর এপার থেকে বোরো ধান কেটে ট্রলিতে নিজ বাড়িতে নেওয়ার সময় জানতে চাইলে, তিনি জানান, ব্রিজটির সংযোগ সড়ক ভেঙ্গে যাওয়ার কারণে শ্রমিক দিয়ে কাঁধে করে বোরো ধান বাড়িতে নিতে হয়েছে। এর ফলে দুবিঘা জমির ধান ঘরে তুলতে তাকে দ্বিগুণ খরচ গুনতে হয়েছে । ডেজার মিশিন দিয়ে অবৈধ ভাবে বালু তুলার কারনে এমনটা হয়েছে বলে মনে অনেকের ধারণা।

বড়পলাশবাড়ী ইউনিয়নের সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান মোঃ আমিনুল ইসলাম বলেন, বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় কুশলডাঙ্গী বাজারে গিয়েছিলাম। ব্যবসায়ীরা বিষয়টি আমাকে জানিয়েছে। শুক্রবার ও শনিবার অফিস বন্ধ থাকার উপজেলা প্রকৌশলীকে জানানো হয়নি। রবিবার বিকালে অফিসে গিয়ে ইঞ্জিনিয়ারকে বিষয়টি জানিয়ে সমাধানের চেষ্টা করব।

ব্রিজের পাশে বসবাস করা লোকজন জানায়, দীর্ঘদিন ধরে একটি চক্র তীরনই নদী থেকে অবৈধভাবে বালু তুলছে। আর এই বালু তোলার কারণে ব্রিজ ও আশপাশের আবাদি জমি এবং ঘরবাড়িগুলো ঝুঁকির মুখে পড়েছে। একাধিকবার মৌখিক এবং লিখিত ভাবে জানানোর পরেও প্রশাসন কোন পদক্ষেপ নেয়নি।

উপজেলা প্রকৌশলী মাসুদার রহমান বলেন, কুশলডাঙ্গী বাজারের পাশে ব্রিজের সংযোগ সড়ক ধ্বসের বিষয়টি কেউ জানায়নি। লোক পাঠিয়ে খোঁজ নিয়ে দ্রুত সংস্কারের ব্যবস্থা করা হবে।

বালিয়াডাঙ্গী উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) ফাতেহা তুজ জোহরা বলেন, বালু উত্তোলনকারীদের ধরতে আমি লোক পাঠিয়েছিলাম। কিন্তু কাউকে পায়নি। স্থানীয় অফিসে লিখিত অভিযোগ অথবা বালু উত্তোলন করার সময় খবর দিয়ে সহযোগিতা করলে অবৈধ বালু ব্যবসায়ীদের আইনের আওতায় আনা সম্ভব হবে। তাছাড়া আমরা চেষ্টা করছি নদী থেকে কেউ যেন অবৈধভাবে বালু উত্তোলন না করতে পারে সেদিকে আমাদের প্রসাশন নজর রেখেছে কাউকে ধরতে পারলে তাকে আইনের আওতায় আনা হবে এবং আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।