রবিবার , ১৯শে মে, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ || ৫ই জ্যৈষ্ঠ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ - গ্রীষ্মকাল || ১১ই জিলকদ, ১৪৪৫ হিজরি

প্রেমের টানে ভারতীয় তরুণী বাংলাদেশী যুবককে বিয়ে,সন্তান জন্মের আগেই প্রতারক স্বামী আত্নগোপনে

প্রকাশিত হয়েছে- মঙ্গলবার, ৫ মার্চ, ২০২৪

প্রেমের টানে ভারতীয় তরুণী বাংলাদেশী যুবককে বিয়ে,সন্তান জন্মের আগেই প্রতারক স্বামী আত্নগোপনে

মোঃ মেরাজ আহমেদ, সখিপুর (টাংগাইলে)প্রতিনিধি

প্রেমের টানে পরিবারকে না জানিয়ে ভারতীয় শাহনাজ খাতুন নামক এক তরুণী বাংলাদেশের টাঙ্গাইল জেলার সখীপুর উপজেলাধীন নবগঠিত বড়চওনা ইউনিয়নের কুতুবপুরের আল আমিন নামক এক যুবককে বিয়ে করেন।দীর্ঘ এক বছর লুকিয়ে ঘরসংসার চলাকালীন ওই তরুণীর গর্ভ থেকে জন্ম নেয় এক পুত্র শিশু।শিশু পুত্র জন্মের বেশ কয়েকদিন আগেই ওই তরুণীকে অসহায় অবস্থায় ফেলে রেখে প্রতারক আল আমিন আত্নগোপনে চলে যান।
তাই বাধ্য হয়েই ওই তরুণী তার প্রতারক স্বামীর বিরুদ্ধে নির্যাতনের অভিযোগ করে সখীপুর থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন।শাহনাজ খাতুন (২৫) নামের ওই তরুণী বছরখানেক আগে ভারতের পশ্চিমবঙ্গের বীরভূম থেকে বাংলাদেশের টাঙ্গাইলে এসে আলামিন নামক ওই যুবককে বিয়ে করেন। তাঁর ১৪ দিনের নবজাতক পুত্র সন্তান আছে। সন্তান জন্মের কয়েকদিন আগে তাঁকে রেখে আলামিন পালিয়ে গেছেন বলে অভিযোগ শাহনাজের।
৪ মার্চ সোমবার শাহনাজ খাতুন সখীপুর থানায় গিয়ে একটি লিখিত অভিযোগ জমা দিয়েছেন। নির্যাতন করে স্বামী পালিয়ে যাওয়ায় ১৪ দিনের নবজাতককে নিয়ে মানবেতর জীবন যাপন করছেন বলে জানান ওই তরুণী।

লিখিত অভিযোগ সূত্রে জানা গেছে, ২০২২ সালে সখীপুর উপজেলার কুতুবপুর গ্রামের আমির আলীর ছেলে আলামিন সৌদি আরবে যান। তখন তিনি দুই সন্তানের জনক ছিলেন। সেখানে গিয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে পশ্চিমবঙ্গের ওই তরুণীর সঙ্গে তাঁর পরিচয় হয়। একপর্যায়ে তাঁদের প্রেম হয়। ২০২৩ সালের জানুয়ারিতে দেশে ফেরেন আলামিন। এরপর গত বছরের ২১ এপ্রিল পশ্চিমবঙ্গের তরুণী শাহনাজ খাতুন পাসপোর্ট ভিসা ছাড়াই কৌশলে বর্ডার পাড়ি দিয়ে টাঙ্গাইলের সখীপুর চলে আসেন। আলামিন বাড়িতে কাউকে না জানিয়ে ওই তরুণীকে উপজেলার বড়চওনা এলাকায় একটি ভাড়া বাসায় রেখে বিয়ে করেন। দেশে ট্রাক চালিয়ে তিনি জীবিকা নির্বাহ করতেন। মাসখানেক আগে ভাড়া বাসায় ভারতীয় ওই স্ত্রীকে রেখে পালিয়ে যান আলামিন। ১৪ দিন আগে ছেলেসন্তানের জন্ম দেন তাঁর স্ত্রী। কোনো উপায় না পেয়ে সোমবার সখীপুর থানায় গিয়ে স্বামীর বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ দেন ওই তরুণী।

ওই তরুণী জানান, ‘ভারত থেকে আসার সময় চার লাখ টাকা ও স্বর্ণালংকার নিয়ে এসেছিলাম। আলামিন ওই টাকা ও স্বর্ণালংকার আত্মসাৎ করেছেন। পালিয়ে যাওয়ার আগে আমাকে শারীরিক ও মানসিকভাবে নির্যাতন করেছেন। আমি আর দেশে ফিরে যাব না। সেখানে ফেরার মতো পরিস্থিতি নেই। আলামিন ও তাঁর সন্তানকে নিয়ে আমি বাংলাদেশেই সংসার করতে চাই।’
এ বিষয়ে বড়চওনা ইউনিয়ন পরিষদের ৮ নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য মিজানুর রহমান বলেন, ‘আলামিন বাড়ি থেকে পালিয়ে গেছেন। আমরা নবজাতকসহ ওই ভারতীয় তরুণীকে সাহায্য–সহযোগিতা করছি। আলামিনকে খুঁজে পেলে মেয়েটি যাতে সংসার করতে পারেন, সে ব্যবস্থা করা হবে।’
এ বিষয়ে সখীপুর থানার উপপরিদর্শক সুকান্ত রায় বলেন, লিখিত অভিযোগ পেয়ে মেয়েটিকে দেখতে বড়চওনা এলাকার ওই বাসায় গিয়েছিলেন তিনি। স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান ও ইউপি সদস্যকে ওই তরুণীর ভরণপোষণের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। পলাতক আলামিনকে খুঁজে বের করার চেষ্টা চলছে বলে জানিয়েছেন তিনি।f