রবিবার , ১৯শে মে, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ || ৫ই জ্যৈষ্ঠ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ - গ্রীষ্মকাল || ১১ই জিলকদ, ১৪৪৫ হিজরি

বান্দরবানে কীটনাশক প্রয়োগে অর্ধশত পাখি নিধন

প্রকাশিত হয়েছে- শুক্রবার, ২২ ডিসেম্বর, ২০২৩

বান্দরবানে কীটনাশক প্রয়োগে অর্ধশত পাখি নিধন

মোঃমোরশেদ আলম চৌধুরী বান্দরবান

বান্দরবান আলীকদমের পাট্টাখাইয়া গ্রামে কীটনাশক প্রয়োগে অর্ধশত পাখি নিধন
দুর্বৃত্তের দেয়া কীটনাশকে আক্রান্ত হয়ে অর্ধশতাধিক পাখি মারা গেছে আলীকদম উপজেলার চৈক্ষ্যং ইউনিয়নের পাট্টাখাইয়া গ্রামে। শুক্রবার সকালে পাখি নিধনের ঘটনাটি স্থানীয় বাসিন্দা কবি জিয়াবুলের নজরে আসে।

কবি জিয়াবুল জানান, শুক্রবার (২২ ডিসেম্বর) ভোরে তার গ্রামের বাড়ি এলাকা চৈক্ষ্যং ইউনিয়নের ঞোমং হেডম্যানের ধান ক্ষেতে এ ঘটনা ঘটেছে। ধান কেটে নেওয়ার পর কৃষি জমিতে কে বা কারা কীটনাশক ছিটিয়ে পাখি নিধন করে।

কবি এমডি জিয়াবুল তার ফেসবুক পোস্টে লিখেন, বৈচিত্র্যময় প্রকৃতির ভারসাম্য রক্ষা ও ইকো সিস্টেমকে বাঁচিয়ে রাখার স্বার্থে পাখির প্রতি যত্নবান ও দায়িত্বশীল আচরণ করা জরুরি। অন্য জীবের প্রতি আমাদের আচরণ সেরা হওয়া উচিত। অথচ প্রতিনিয়ত কারণে-অকারণে আমাদের রূঢ় আচরণ ও নিষ্ঠুরতার স্বীকার হয় নির্বাক পশু-পাখিগুলো।

বিশেষ করে প্রতি বছর শীতকাল এলে আমাদের দেশে একশ্রেণির মানুষ পাখি শিকারে তৎপর হয়ে ওঠে, যা অত্যন্ত গর্হিত কাজ এবং প্রচলিত আইনের অপরাধ। প্রকৃতির উর্বর ভূমি বাংলাদেশে প্রতি বছর শীতের সময় পৃথিবীর বিভিন্ন শীতপ্রধান দেশ থেকে উড়ে আসে হাজার হাজার পরিযায়ী পাখি।

পাখি বিশ্ব প্রকৃতির এক অনন্য সম্পদ। এদের অবাধ বিচরণ ও প্রজননের ব্যাপারে সবার যত্নশীল হওয়া উচিত- কিন্তু তা না করে তার ওপর কিছু মানুষ পাখি নিধনের কাজে ব্যস্ত হয়ে ওঠে।

আমাদের দেশে জনসংখ্যা বৃদ্ধির পরিপ্রেক্ষিতে বিভিন্ন বিল-ঝিল, জলাশয় ভরাট করে বসতি স্থাপনের ফলে, বন-জঙ্গল উজাড় করে প্রতিনিয়ত পাখির আবাসস্থল ধ্বংসের পাশাপাশি প্রকৃতির বিরূপ আচরণে পাখিদের সংখ্যা দিনদিন হ্রাস পাচ্ছে।

এ ব্যাপারে লামা বন বিভাগের আলীকদম তৈন রেঞ্জ কর্মকর্তা জুলফিকার আলী সাংবাদিকদের বলেন, পাখিরা আমাদের পরিবেশের এক বড় সম্পদ। তারা শুধু পরিবেশের সৌন্দর্যই বৃদ্ধি করে না, বনের খাদ্যশৃঙ্খলে স্বাভাবিক ধারা বজায় রাখা, ক্ষতিকর কীটপতঙ্গ নিয়ন্ত্রণ, উদ্ভিদের পরাগায়ন ও বীজের বিস্তারে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রয়েছে পাখির। এরা জলজ পোকা, ধানের পোকা খেয়ে কৃষকের উপকার করে থাকে। পাখি প্রকৃতি ও মানুষের পরম বন্ধু। পাখির ডাকে ভোর হয় আবার পাখির কলকাকলিতে পৃথিবীর বুকে সন্ধ্যা নেমে আসে। কোনো কোনো পাখি প্রহরে প্রহরে ডেকে আমাদের প্রকৃতির ঘড়ির কাজ করে থাকে। তাই যে করেই হোক পাখি বাঁচাতে হবে। যারা পাখি নিধন করছেন, তাদের অবশ্যই আইনের আওতায় আনা হবে।

প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, বন্যপ্রাণী সংরক্ষণ ও নিরাপত্তা আইন, ২০১২ অনুযায়ী পাখি শিকার, হত্যা, আটক ও ক্রয়-বিক্রয় দণ্ডনীয় অপরাধ। এর শাস্তি দুই বছরের কারাদণ্ড এবং ২ লাখ টাকা জরিমানার বিধান রয়েছে