মঙ্গলবার , ৭ই মে, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ || ২৪শে বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ - গ্রীষ্মকাল || ২৮শে শাওয়াল, ১৪৪৫ হিজরি

বাহির রাষ্ট্র থেকে পেয়াঁজ রসুন আমদানির খবর পেয়ে দাম কমালো পাইকারি বাজারে

প্রকাশিত হয়েছে- সোমবার, ৫ জুন, ২০২৩

বাহির রাষ্ট্র থেকে পেয়াঁজ রসুন আমদানির খবর পেয়ে দাম কমালো পাইকারি বাজারে

কামরুল ইসলাম

আমদানির খবরে পাইকারিতে কমেছে বেচাকেনা-দাম
সন্ধ্যায় আমদানি অনুমতির খবরে দেশের বৃহত্তম ভোগ্যপণ্যের পাইকারি বাজারে পেঁয়াজের বিক্রি কমে গেছে। আজ (সোমবার) থেকে ভারতীয় পেঁয়াজ আমদানির অনুমতি মিলেছে। ভারত থেকে আমদানি শুরু হলে পেঁয়াজের দাম তিন ভাগের এক ভাগে নেমে আসবে বলে ব্যবসায়ীদের ধারণা।

দেশের বৃহত্তম ভোগ্যপণ্যের পাইকারি বাজার খাতুনগঞ্জে গতকাল (রবিবার) পেঁয়াজের পাইকারি দর ছিল কেজি ৮৫ থেকে ৯০ টাকা। যা খুচরায় কোথাও কোথাও সেঞ্চুরি করেছে।
ওয়েবসাইট ঘেঁটে দেখা গেছে, মার্চের শেষের দিকে ভারতের মহারাষ্ট্রের নাসিকের কৃষকরা পাইকারি বাজারে প্রতি ১০০ কেজি পেঁয়াজের দাম পেয়েছেন মাত্র ২০০ থেকে ৪০০ রুপি। কৃষকদের অন্তত ৪০০ রুপি লাভ করতে হলে পেঁয়াজের দাম প্রতি ১০০ কেজিতে ১২০০ রুপির ওপরে থাকতে হবে। এই সংকট থেকে মুক্তির দাবিতে ভারতের পশ্চিমাঞ্চলীয় এই রাজ্যের কৃষকরা পেঁয়াজের দাম বাড়ানোর দাবিতে বিক্ষোভে নামার পর মুম্বাই অভিমুখে ২০০ কিলোমিটার পদযাত্রা করে। বিক্ষোভের মুখে কর্তৃপক্ষ পেঁয়াজ চাষীদের জন্য কিছু আর্থিক প্রণোদনাও ঘোষণা করে।

খাতুনগঞ্জের পেঁয়াজ ব্যবসায়ীদের সাথে ভারতের পেঁয়াজ রপ্তানিকারকদের নিয়মিত যোগাযোগ রয়েছে। খাতুনগঞ্জের একাধিক ব্যবসায়ী গণমাধ্যম কে জানান, ভারতের পাইকারি বাজারে বর্তমানে পেঁয়াজের কেজি ৮ থেকে ১২ রুপি (সাড়ে ১০টাকা থেকে সাড়ে ১৫টাকা)। তার সাথে পরিবহন খরচ ও আমদানি ব্যয় যোগ করলেও প্রতি কেজি পেঁয়াজের দাম ২০ থেকে ২২ রুপির বেশি হবে না। সে হিসেবে ভারতীয় পেঁয়াজ প্রতি কেজি ৩০ টাকায় দেশের গ্রাহকের কাছে পৌঁছানো সম্ভব হবে।
খাতুনগঞ্জের হামিদ উল্লাহ খান মার্কেট ব্যবসায়ী সমিতির সাধারণ সম্পাদক মো. ইদ্রিস গণমাধ্যম কে জানান, কৃষকের স্বার্থ বিবেচনা করে গত ১৫ মার্চ থেকে পেঁয়াজ আমদানি সাময়িকভাবে বন্ধ রাখে সরকার। এরপর থেকে ক্রমান্বয়ে পেঁয়াজের দাম বাড়তে থাকে। মাঝে বাণিজ্য মন্ত্রী টিপু মুন্সী কয়েকবার পেঁয়াজ আমদানির ঘোষণা দিলে দুই-একদিন বাজার নিম্নমুখী হয়। কিন্তু এরপর আরো বেড়ে যায়। সর্বশেষ গতকাল (রবিবার) সবচেয়ে ভালমানের পেঁয়াজের পাইকারি দর ছিল ৯০ টাকা। তবে ভারতীয় পেঁয়াজ দেশে আসা শুরু করলেই দাম পড়ে যাবে। ব্যবসায়ীরা চাইলে ৩০ টাকার মধ্যে দর রাখা সম্ভব হবে বলে তিনি উল্লেখ করেন।

চাক্তাইয়ের মেসার্স আফরা ট্রেডিংয়ের স্বত্বাধিকারী মো. আলাউদ্দিন আলো গণমাধ্যম কে জানান, যেহেতু আমদানি অনুমতি মিলেছে, আমদানিকারকরা পরদিন থেকেই পেঁয়াজ আনা শুরু করবেন। যার প্রভাব গতকাল (রবিবার) থেকেই পাইকারি বাজারে পড়তে শুরু করেছে। দিনের বেলায় পেঁয়াজের পাইকারি দর ছিল কেজি ৯০ টাকা। সন্ধ্যার পর ১০ থেকে ২০ টাকা কমেও ক্রেতা পাওয়া যায়নি। যেভাবে দাম বেড়েছে সেভাবেই দ্রুত দাম কমবে বলে তিনি উল্লেখ করেন।
কৃষি অধিদপ্তরের তথ্যমতে, বাংলাদেশে বছরে পেঁয়াজের চাহিদা ২৬ থেকে ২৮ লাখ টন। চলতি বছর উৎপাদন হয়েছে ৩৪ লাখ টন।
চীনের পর বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহত্তম পেঁয়াজ উৎপাদনকারী দেশ ভারত। বছরে প্রায় ২ কোটি ৪০ লাখ টন পেঁয়াজ উৎপাদন হয় ভারতে। সে দেশের অর্ধেকের বেশি পেঁয়াজ উৎপাদন হয় মহারাষ্ট্রেই। উৎপাদিত পেঁয়াজের প্রায় ১০ থেকে ১৫ শতাংশ অন্য দেশে রপ্তানি করে। যার অন্যতম আমদানিকারক বাংলাদেশ।