শুক্রবার , ১৭ই মে, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ || ৩রা জ্যৈষ্ঠ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ - গ্রীষ্মকাল || ৯ই জিলকদ, ১৪৪৫ হিজরি

সাতক্ষীরায় সাংবাদিককে গলায় রশি পরানোর হুমকি দিলেন এসিল্যান্ড

প্রকাশিত হয়েছে- বৃহস্পতিবার, ৪ এপ্রিল, ২০২৪
সাতক্ষীরা প্রতিনিধি:সাতক্ষীরার তালা উপজেলা সহকারি কমিশনার (ভূমি) আরাফাত হোসেন গলায় রশি পরানোর হুমকি দিয়েছেন শাহীন হোসেন নামে এক সাংবাদিককে। বৃহস্পতিবার (৪ এপ্রিল) বেলা ১১টার দিকে এসিল্যান্ড মোবাইল ফোনে হুমকি দেন ওই সাংবাদিককে।
শাহীন হোসেন তালা উপজেলার পাটকেলঘাটা থানাধীন নগরঘাটা ইউনিয়নের বাসিন্দা এবং সাতক্ষীরার স্থানীয় একটি পত্রিকার প্রতিনিধি।
জানা যায়, নগরঘাটা ভূমি অফিসের পিওন সুইটি খাতুন মিউটিশন করে দেওয়ার কথা বলে বাশারত নামের এক ব্যক্তির কাছ থেকে চার হাজার টাকা নেন। তবে দীর্ঘদিন ঘোরানোর পরেও জমির মিউটিশন করে দেননি তিনি। এ বিষয়ে তথ্য নেওয়ার জন্য গত সপ্তাহে নগরঘাটা ভূমি অফিসে যান সাংবাদিক শাহিন। অফিসে গিয়ে সুইটি খাতুনকে দেখতে না পেয়ে অন্য স্টাফের মাধ্যমে জানতে পারেন বেশ কয়েকদিন অফিসে আসেন না সুইটি। অফিসিয়াল কোনো ছুটির আবেদন না করে তিনি কর্মস্থলে অনুপস্থিত রয়েছেন এ বিষয়টি উপজেলা ভূমি সহকারিকে জানান ওই সাংবাদিক। এতে দুদিন পরে অর্থাৎ বৃহস্পতিবার সকাল ১১টার দিকে ওই সাংবাদিককে মোবাইল ফোনে কল করে গলায় রশি পরানোর হুমিক প্রদান করেন ভূমি সহকারি আরাফাত হোসেন।
এদিকে, সাংবাদিক ও এসিল্যান্ডের কথাপকথনের একটি কল রেকর্ড এসেছে গণমাধ্যমকর্মীদের হাতে। কল রেকর্ডে সহকারি কমিশনার আরাফাত হোসেন সাংবাদিককে বলেন, ‘আপনি কি শাহিন? গতদিন আমাকে আমাদের অফিসের এক স্টাফের বিষয়ে ফোন দিছিলেন। গতবছর গাছ কাটার বিষয়ে ফোন দিছিলেন। আমার অফিসের মহিলা স্টাফ ১ দিন, ২ দুই দিন, এক সপ্তাহ অসুস্থ থাকতেই পারে। সেটা নিয়ে আপনি বলার কে রে ভাই? আপনি কি ভাবতেছেন ওইটা করে বাঁচতে পারবেন? গলায় কিন্তু রশি পড়বে আপনার। একজন মহিলাকে আপনি হয়রানী করতেছেন। ফেসবুকে স্টাটাস দেন, হ্যানো করেন, তেনো করেন। আমি কিন্তু আপনার বিরুদ্ধে লিখব। আমি কিন্তু একদিন বলেছি, সাংবাদিকতা করবেন ভালো করে করেন। একজন মহিলার বিরুদ্ধে অবৈধভাবে লেখেন না, আপনি কিন্তু বিপদে পড়বেন।’
তথ্য দেওয়া কি আমাদের অপরাধ শাহিনের এমন প্রশ্নের জবাবে এসিল্যান্ড আরাফাত বলেন, ‘তথ্য দেওয়া অপরাধ না। আপনি তথ্য দিবেন, সেটা আপনার দায়িত্ব। কিন্তু ভুল তথ্য দেবেন কেন? সাংবাদিকতা ভালোভাবে করেন। আর কয় দিন অফিসে আসলো, না আসলো আপনাকে বলতে হবে কেন? আপনি কে? আপনি যা লেখার লেখেন, যা করার করেন। দেখেন আপনার কপালে কী ঘটে।’
এ বিষয়ে সাংবাদিক শাহিন হোসেন বলেন, নগর ঘাটা ভূমি অফিসের পিয়ন সুইটি খাতুন ছুটি না নিয়ে অনেকদিন কর্মস্থলে অনুপস্থিত ছিলেন। বিষয়টি সহকারী কমিশনার (ভূমি) আরাফাত হোসেনকে জানানো হয়। জানানোর দুদিন পর অর্থাৎ বৃহস্পতিবার তিনি আমাকে ফোন করে গলায় রশি পরানোসহ নানাবিধ আপত্তিকর কথা বলেন। সাংবাদিকরা সংশ্লিষ্ট দপ্তরকে তথ্য দিয়ে সহযোগিতা করবে এটাই তো নিয়ম। কিন্তু তথ্য দিয়ে বিপাকে পড়তে হচ্ছে এবং হুমকির সম্মুখীন হতে হচ্ছে। সাংবাদিক নেতারা বিষয়টি নিয়ে ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য উর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা বলবেন। একজন এসিল্যান্ডের আচরণ এমন জঘন্য কেন হবে। বিষয়টি রীতিমতো লজ্জাজনক।
বিষয়টি অস্বীকার করে তালার উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) আরাফাত হোসেন বলেন, সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলতে হলে উর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষের কাছ থেকে অনুমতি নিতে হয়। আর ওই সাংবাদিকদের সঙ্গে কোনো ঘটনা ঘটেনি।