নেত্রকোণায় ধানের ফলন ভাল হওয়ায় এবং আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় কৃষকের মুখে হাসি
মোঃ নাজমুল ইসলাম (নেত্রকোণা জেলা প্রতিনিধি)
নেত্রকোণায় ধানের ফলন ভাল হওয়ায় এবং আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় কৃষকের মুখে হাসির দেখা দিয়েছে। কৃষি বিভাগের তথ্য অনুযায়ী, শনিবার পর্যন্ত হাওরে ৯৮ ভাগ এবং উচু এলাকায় ৩৮ ভাগ ধান কাটা সম্পন্ন হয়েছে। আবহাওয়া অনুকুলে থাকলে আগামী ১০/১৫ দিনের মধ্যে ধান কাটা শেষ হয়ে যাবে।
জেলার বিভিন্ন অঞ্চল ঘুরে এবং কৃষকদের সাথে কথা বলে জানা যায়, উজান থেকে নেমে আসা অকাল বন্যা ও ঝড়, শিলাবৃষ্টির হাত থেকে ফসল রক্ষা এবং আগাম ফলনের আশায় নেত্রকোনার কৃষকরা তাদের জমিতে ব্রি-২৮ ধান ও ব্রি-২৯ ধান চাষ করেছিল। হাওরাঞ্চলে বেশ কিছু জমির ব্রি-২৮ ধান ছিটা হওয়ায় এবং শিলাবৃষ্টির কারণে ধান জমিতে ঝড়ে যাওয়ায় অনেক কৃষকের কপাল পুড়েছে। লাভের আশায় তারা এখন লোকসানের মুখে পড়তে হয়েছে। এতে সারা বছরের খোরাকী এবং ঋণ পরিশোধ নিয়ে চরম দুশ্চিন্তায় পড়েছে কৃষকরা। তবে ব্রি-২৯ ধানের ফলন ভাল হয়েছে।
নেত্রকোণা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্রে জানা যায়, নেত্রকোণা জেলায় চলতি ইরি-বোরো মওসুমে ধান আবাদের লক্ষ্যমাত্র নির্ধারণ করা হয় ১ লক্ষ ৮৪ হাজার ৪ শত ৭০ হেক্টর জমি। শেষ পর্যন্ত আবাদ হয়েছে ১ লক্ষ ৮৪ হাজার ৬ শত ৯০ হেক্টর জমি। ধান উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছিল প্রায় ১১ লক্ষ ৭৭ হাজার মেট্রিক টন এবং চাল উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছিল প্রায় ৭ লক্ষ ৭৬ হাজার ৭৭৫ মেট্রিক টন।
খালিয়াজুরী উপজেলার লেপসিয়া গ্রামের রহমত আলী বলেন, আমি প্রায় ৩৫ কাটা জমিতে ব্রি-২৮ ধান ও ৬০ কাটা জমিতে ব্রি-২৯ ধান করেছিলাম। ব্রি-২৮ ধান ছিটা হয়েছে। তবে ব্রি-২৯ ধানের ফলন ভাল হয়েছে।
মদন উপজেলার গোবিন্দশ্রী গ্রামের কৃষক সবুজ মিয়া বলেন, প্রতি কাটা জমিতে আগে যেখানে ধান হতো ৭/৮ মন সেখানে ধান হয়েছে ৩/৪ মন।
ছিটা হওয়ার পরও কেন ধান কাটছেন জানতে চাইলে কৃষক আলাল মিয়া বলেন, গরু খাবার সংগ্রহ করতেই ধান কাটছি।
কেন্দুয়া উপজেলার দুল্লী গ্রামের আবুল মিয়া বলেন, উজান এলাকায় ধানের ফলন ভাল হয়েছে। ক্ষেতেই কাঁচা ধান ৮ শত থেকে সাড়ে ৮ শত টাকা মন ধরে বিক্রি করতে পারছি।
নেত্রকোনা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক কৃষিবিদ মোহাম্মদ নুরুজ্জামান বলেন, নেত্রকোনার হাওরাঞ্চলে ধান কাটা প্রায় শেষ পর্যায়ে আর উচু এলাকায় পুরোদমে ধান কাটা, মাড়াই ও ধান শুকানোর কাজ চলছে। কৃষক ও শ্রমিকের পাশাপাশি ৭৩০টি কম্বাইন হারভেষ্টার মেশিন দিয়ে দ্রুততম সময়ে ধান কাটার কাজ চলছে। কৃষকরা যাতে ন্যায্যমূল্য পায় তার জন্য সরকার খাদ্য বিভাগকে প্রতি কেজি চাল ৪৪ টাকা এবং প্রতি কেজি ধান ৩০ টাকা করে ক্রয়ের নির্দেশনা দিয়েছে