ঢাকাবৃহস্পতিবার , ২৮ মার্চ ২০২৪
  1. অগ্নিকান্ড
  2. অনুষ্ঠান
  3. অপরাধ
  4. অবৈধ বালু উত্তোলন
  5. অভিনন্দন
  6. অর্থনীতি
  7. আইন ও বিচার
  8. আওয়ামী লীগ
  9. আওয়ামী লীগে
  10. আক্রান্ত
  11. আটক
  12. আত্মহত্যা
  13. আদালত
  14. আনন্দ মিছিল
  15. আন্তর্জাতিক

পাইকগাছায় ভেজাল সরিষা তেলে সয়লাব, স্বাস্থ্য ঝুঁকিতে মানুষ কারখানা ও বাজার মনিটরিং জরুরি

admin
মার্চ ২৮, ২০২৪ ৬:০৭ অপরাহ্ণ
Link Copied!

এফ এম এ রাজ্জাক পাইকগাছা (খুলনা)-পাইকগাছায় উপজেলার বিভিন্ন বাজার ভেজাল সরিষা তেলে ছেয়ে গেছে। অসাধু ব্যবসায়ীরা স্বল্প সময়ে অধিক লাভের জন্য এধরনের ভেজালের সাথে যুক্ত হয়েছেন। উপজেলার অধিকাংশ সরিষা ভাঙানো কারখানার ভিতরে প্রকাশ্যেই চলছে ভেজালের কারবার। প্রশাসনের নাকের ডগায় এসব গোডাউনে এই ভেজাল সরিষা তেল তৈরির রমরমা কারবার চললেও প্রশাসন যেন নীরব দর্শকের ভূমিকা পালন করছে।
স্থানীয়দের অভিযোগ কপিলমুনি বাজারের অসীম সাধুর  ও সুনীল সাধুর অয়েলমিল,প্রহল্লাদ দত্তের বিনোদ অয়েলমিল   খাইরুল শেখের উৎসব অয়েলমিল, সত্যজিৎ সাধুর সাধুখা ওয়েল মিল, বঙ্কিম দত্তে দত্ত ওয়েলমিল, ও আব্দুর রাজ্জাকের  হাজরা অয়েলমিল, মিলে চলছে ভেজাল তেলের ছড়াছড়ি।এছাড়া ছোটখাটো আকারে ভেজাল কারবার চলছে বোয়ালিয়ার সাধু খাঁ অয়েলমিল,গোপালপুর সরদার অয়েলমিলে। কপিলমুনি, বাজার গুলোর মিলে প্রতিদিন  কয়েকশ’ লিটার ভেজাল সরিষার তেল উৎপাদন হচ্ছে। যা পাইকগাছাতে প্রত্যন্ত অঞ্চলসহ আশ পাশের বিভিন্ন উপজেলা গুলোতে ছড়িয়ে পড়ছে। গোপন সূত্রে জানা গেছে, এসব কারখানায় কম দামের নিম্ন মানের তেল ও পাম অয়েল জাতীয় তেলের মধ্যে সরিষার তেলের রং আনতে ব্যবহার করা হচ্ছে এক ধরণের ক্ষতিকারক রাসায়নিক তরল পদার্থ। এক টিন সাদা বা পাম তেলে এক ড্রপার বা কয়েক এমএল রাসায়নিক বিষাক্ত তরল পদার্থ  ব্যবহার করে মিশ্রণ করলেই সরিষার তেলের রং ধারণ করছে। কোথাও সাদা বা পাম তেলের সঙ্গে মেশানো হচ্ছে সামান্য খাঁটি সরিষার তেলও। এছাড়াও এক টিন তেলে খাঁটি সরিষার তেলের ঝাঁঝ আনতে ব্যবহার করা হচ্ছে অপর এক প্রকার বিষাক্ত দম বন্ধ করা ঝাঁঝ যুক্ত তরল পদার্থ। তেলে ঝাঁঝ আনতে এই বিষাক্ত ঝাঁঝ যুক্ত তরল এক টিনে এক ফোঁটা মেশানো মাত্রই কমদামী সাদা তেল ও পাম তেল খাঁটি সরিষা তেলের মত ঝাঁঝ বিশিষ্ট হয়ে যাচ্ছে। ফলে সাধারণ মানুষের বোঝার উপায় থাকছে না, যে এই বিষাক্ত তেল খাঁটি না কমদামী নামমাত্র সরিষার তেল। ফলে খাঁটি সরিষার তেলের তুলনায় একই রকম দেখতে এই কম দামের ভেজাল সরিষার তেল নিজেদের অজান্তেই কিনছেন সাধারণ মানুষ।
জানা গেছে, এসব কারখানা থেকে শহর ও গ্রাম-গঞ্জের হাট-বাজারের দোকানদাররা যে দামে বলবেন সেই দামের তেলের টিন তৈরি করে দিচ্ছেন এই সকল অসাধু ভেজাল তেল কারখানা কর্তৃপক্ষ। তারপর খাঁটি সরিষার তেলের তুলনায় এক টিন ভেজাল সরিষার তেল কিছুটা কম দামে বিক্রি করছেন অসাধু পাইকারী ব্যবসায়ীরা। টিন প্রতি কম দামে খাঁটি সরিষার তেলের মত ঝাঁঝ যুক্ত ভেজাল তেল, খাঁটি সরিষার তেল বলে বেশি লাভের আশায় হাটে বাজারে কেজি বা লিটার হিসেবে বিক্রি করছেন সাধারণ খুচরা দোকানদাররা। সেকারণে এই সকল ভেজাল সরিষার তেল শহর থেকে গ্রামগঞ্জের গৃহস্থ বাড়িতে পৌঁছে যাচ্ছে। ফলে বিষাক্ত রাসায়নিক তরল সাধারণ মানুষ থেকে ছাত্র- ছাত্রীদের শরীরে দিনের পর দিন নিজেদের অজান্তেই প্রবেশ করছে। যার ফলস্বরূপ যে কোনও দিন খাদ্যে বিষক্রিয়ার খবর পাওয়ারও সম্ভাবনা দেখছেন সচেতন মহল। তেল মিলে ভেজাল সরিষা তেল তৈরির কারবার চললেও তারা যেন কোন এক ভাবে প্রশাসনের ধরা ছোঁয়ার বাইরে থেকে যায়। এলাকাবাসীর অভিযোগ বাজারে মোবাইল কোর্ট চালাতে এলেই সঙ্গে সঙ্গে ভেজাল তেল উৎপাদনকারীরা মোবাইল কোর্ট টিমের সদস্যদের বা   অফিসের স্টাফদের মাধ্যমে আগাম খবর পেয়ে সাথে সাথে নিজেদের তেল মিল ও গোডাউনের মেইন গেটে তালা মেরে উৎপাদন সাময়িকভাবে বন্ধ রেখে দেন। অফিসাররা চলে যাওয়ার পর থেকেই ফের ভেজাল তেল তৈরির কাজ শুরু হয়ে যায়।
এছাড়া বিভিন্ন জেলার মিলের ছাপানো কাগজের মোড়কে বা প্রিন্টযুক্ত টিনের মধ্যে থাকা সরিষার তেলের মানও সঠিক কিনা প্রশ্ন রয়েছে। এলাকাবাসীর দাবি, সমস্ত ভেজাল তেল মিল ও ভেজাল মাল বিক্রির দোকানগুলিতে প্রশাসনের পক্ষ থেকে অতি গোপনে এক সাথে অভিযান পরিচালনা করা হোক। যাতে ভেজাল তেলে ও ভেজাল দ্রব্য বিক্রয়কারি অসাধু ব্যক্তিরা নিজ নিজ মিলের প্রধান গেটে ও দোকানে তালা মারার সুযোগ না পান। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ভেজাল সরিষা তেলের এক কারবারি জানান, উপর মহল থেকে নিচ মহল পর্যন্ত ‘সেটিং’ করেই এই ব্যবসা চলছে। উপর মহল থেকে নিচ মহল পর্যন্ত কারা এই তালিকায় রয়েছে ও কি সেটিং রয়েছ এমন প্রশ্ন করা হলে সে ব্যবসার খাতিরে কোনও উত্তর দেননি। পাইকগাছা উপজেলা আদালতের সিনিয়র আইনজীবী  এডঃ জি,এ সবুর বলেন, ভেজাল তেল ও মাল তৈরি বা বিক্রির বিষয়ে কঠোর আইন রয়েছে। তবে এ সব দেখভাল করার জন্য যারা নিয়োজিত  তাদের দুর্নীতি, অনিয়ম ও উদাসীনতার কারণে অপরাধীদের চিহ্নিত করে আইনে সোপর্দ  করা হচ্ছে না। বিচার হীনতার কারণে  ভেজাল কারবারিদের সংখ্যা বৃদ্ধি পাচ্ছে।  এ ব্যাপারে শিশু বিশেষজ্ঞ ডাক্তার কাওছার আলী জানান, এসব ভেজাল তেল দীর্ঘদিন খেলে লিভার, কিডনি, ও হার্টের রোগে আক্রান্ত হয়ে মানুষ মৃত্যু পথযাত্রী হচ্ছে।  তাছাড়া ভেজাল বা বিষাক্ত কেমিক্যাল মিশিয়ে তৈরি করা  তেল শরীরে দীর্ঘদিন ব্যবহার করলে বিভিন্ন মারাত্মক  চর্মরোগ সহ  স্কিন ক্যান্সার এর মতো মরণ ব্যাধীতে মানুষ আক্রান্ত হতে পারে।   এ বিষয়ে উপজেলার নির্বাহী অফিসার  মাহেরা নাজনীন এর সঙ্গে আলাপ করলে  তিনি জানান আমি উপজেলায় সদ্য যোগদান করেছি, তাই অভিযোগের বিষয়গুলো অনুসন্ধান চালিয়ে আইনগত ব্যবস্থা নেবো। ভেজাল ব্যবসায়ীদের  মধ্যেই প্রচলিত একটি কথা রয়েছে, “বছর পাঁচেক চুটিয়ে এই ভেজাল তেল ও ভেজাল মালের কারবার চালাতে পারলে সারা জীবন কোনও কাজ না করে ঘরে বসে থেকে খেলেও লাভের টাকা শেষ হবেনা।”

এই সাইটে নিজম্ব নিউজ তৈরির পাশাপাশি বিভিন্ন নিউজ সাইট থেকে খবর সংগ্রহ করে সংশ্লিষ্ট সূত্রসহ প্রকাশ করে থাকি। তাই কোন খবর নিয়ে আপত্তি বা অভিযোগ থাকলে সংশ্লিষ্ট নিউজ সাইটের কর্তৃপক্ষের সাথে যোগাযোগ করার অনুরোধ রইলো।বিনা অনুমতিতে এই সাইটের সংবাদ, আলোকচিত্র অডিও ও ভিডিও ব্যবহার করা বেআইনি।