প্রচন্ড উত্তাপের পর অবশেষে যখন এক পশলা বৃষ্টি এসে নামে- সেটা যেন হাফ ছেড়ে বাঁচার মতো। উত্তপ্ত আবহাওয়ার শাসনে রুক্ষ মাটিতে যখন বৃষ্টির প্রথম ফোঁটাগুলো এসে পড়ে, এক অদ্ভুত সোঁদা মাটির গন্ধ নাকে এসে লাগে। এক হৃদয় শীতল করা বাতাস এসময় বয়ে যায়। এসময়টাতে মন মেজাজ ফুরফুরে হয়ে যায়, সবকিছু ভালো লাগতে শুরু করে, খুব ভালো হয়ে যেতে ইচ্ছা করে, সবাইকে ক্ষমা করে দিতে ইচ্ছা করে।
আমাদের প্রিয় নবীজী সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম রমাদানকেও এরকম মৃদু শীতল বাতাসের সাথে তুলনা করেছেন। রসুলুল্লাহ সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন,
“নিজেকে ঐ মৃদু বাতাসে মুক্ত করো, নিজেকে রোমাঞ্চিত করো তার পরশে, নিজের বাহুগুলোকে মেলে ধরো ঐ মুক্ত বাতাসে।”
– মু’জামুল আওসাত: ৬২৪৩।
এই মৃদু ঠান্ডা হাওয়াতে কারো ঠান্ডা লাগে না, আবার কারো মৃত্যুও হয় না। বরং এই ঠান্ডা হাওয়া মানুষকে আনন্দ দেয়। এই বাতাস নিমিষেই আমাদের মনকে ভালো করে দেয়, আমাদের হৃদয়ের সমস্ত দুঃখকষ্ট দূর করে দেয়। যে একবার এই বাতাস গায়ে মাখে – সে আর কখনো দুঃখী হবে না। সুবহানআল্লাহ্!
তবে এটা এমন এক বাতাস, যার স্থায়িত্ব হয় খুব অল্প সময়ের জন্য এবং খুব অল্প কিছু সৌভাগ্যবান বান্দাই কেবল এই বাতাসে রোমাঞ্চিত হওয়ার সুযোগ পায়। প্রতিবছর আমাদের সামনে রমাদান এসে হাজির হয়। সারা মুসলিম বিশ্বে এক উৎসব উৎসব রব শুরু হয়। সেহরি, ইফতার, তারাবীহ, শবে ক্বদর, ঈদের খুশি – এই সবকিছুর ভীড়ে রমাদানটা কেমন জানি নির্দিষ্ট কিছু আচার-অনুষ্ঠানে ঘুরপাক খেতে থাকে। চোখের পলকে সেই রমাদান আবার চলেও যায়। কিন্তু কয়জন রমাদান নামের সেই শীতল বাতাসে নিজেদের প্রশান্ত করতে পারে? কয়জন আছে যারা নিজেদের গুনাহগুলোকে মাফ করিয়ে নিতে পারে? নিজেদের পাপের বোঝা হালকা করে, এক বিশুদ্ধ অন্তর নিয়ে জাহান্নামের আগুন হতে মুক্ত হতে পার?
মহান রব আমাদের সেই তাফিক দান করুক। আমিন।
শুভেচ্ছান্তে,
মো: হারুন অর রশিদ সাকিব
ভালুকা (ময়মনসিংহ) প্রতিনিধি,
জাতীয় দৈনিক মানবাধিকার প্রতিদিন পএিকা