ঢাকাসোমবার , ২৬ ফেব্রুয়ারি ২০২৪
  1. অগ্নিকান্ড
  2. অনুষ্ঠান
  3. অপরাধ
  4. অবৈধ বালু উত্তোলন
  5. অভিনন্দন
  6. অভিযোগ
  7. অর্থনীতি
  8. আইন ও বিচার
  9. আওয়ামী লীগ
  10. আওয়ামী লীগে
  11. আক্রান্ত
  12. আটক
  13. আত্মহত্যা
  14. আদালত
  15. আনন্দ মিছিল
আজকের সর্বশেষ সবখবর

দিনাজপুরের বিরলে হাটে-বাজারে নিষিদ্ধ পলিথিনে সয়লাব বিপর্যয়ের মুখে পরিবেশ ও জনস্বাস্থ্য।

admin
ফেব্রুয়ারি ২৬, ২০২৪ ৬:৩৩ অপরাহ্ণ
Link Copied!

সাদেকুল ইসলাম সুবেল,
(দিনাজপুর)প্রতিনিধি: দিনাজপুরের বিরল পৌর শহরসহ প্রত্যান্ত অঞ্চলের হাট-বাজারগুলোতেও  পলিথিন আর পলিথিন। প্রকৃতির জন্য হুমকি স্বরূপ এই পলিথিন নিষিদ্ধ হলেও এর উৎপাদন, বিপণন এবং বিক্রি অনেকটা ওপেন সিক্রেট। শহর-বন্দর-গ্রাম গঞ্জের হাটে-বাজারে নিষিদ্ধ পলিথিনে সয়লাব। এ যেন পলিথিনের দেশ বাংলাদেশ।
প্রশাসনের নাকের ডগায় পলিথিন এবং নিম্নমানের প্লাস্টিক পণ্য অবাদে বিক্রি, ব্যবহার এবং ফেলে দেওয়া হলেও কারোরই যেন কিছু করার নেই। অপচনশীল পলিথিনের বিকল্প পণ্য বাজারে থাকলেও সেগুলো ব্যবহার নেই বললেই চলে।
এসব বিকল্প পণ্য ব্যবহার বাড়ানোর উদ্যোগও নেই। তাই সহজলভ্য পলিথিনের যথেচ্ছ এবং নিয়ন্ত্রনহীন ব্যবহারে সারা দেশ পলিথিন এবং নিম্নমানের প্লাস্টিকে সয়লাব। পলিথিনে ভরে গেছে দেশের ছোট বড় নদ-নদীর তলদেশ। ভেঙে পড়ছে পয়ঃনিষ্কাশন ব্যবস্থা। সামান্য বৃষ্টিতে বিরলসহ দেশের বিভিন্ন শহর তলিয়ে যাওয়ার অন্যতম কারণ এই পলিথিন এবং প্লাস্টিক বোতল।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, পলিথিন ও প্লাস্টিক পণ্যের ব্যবহার সম্পূণরুপে বন্ধ করা না হলে ভবিষ্যতে বড় ধরনের বিপর্যয় দেখা দিতে পারে। পলিথিন ও প্লাস্টিক পরিবেশ দূষণ ত্বরান্বিত করছে। নিম্নমানের পলিথিন ব্যাগ, কেন্ডির মোড়ক, বিস্কিটের প্যাকেট ও চিপসের প্যাকেট, প্যাকেট শ্যাম্পু, বিভিন্ন ধরনের জুসের প্যাকেট ও বোতল, পানি ও কোমল পানির বোতলে সয়লাব দেশের খাল-বিল, পুকুর, ডোবা, নদ-নদী, এমনকি সাগরও। গবেষকরা বলছেন, সাগরের তলদেশে যে পরিমাণ পলিথিন জমেছে তা একটি মহাদেশের সমান হবে।
এমনকি তারা আরও সতর্ক করে বলেছেন, এভাবে চলতে থাকলে আগামী দিনে নদ-নদীতে মাছ আর পাওয়া যাবে না। পরিবেশ সংরক্ষণ আইন ১৯৯৫-এর বিধান অনুসারে দেশে ২০০২ সাল থেকে পলিথিন ব্যাগ উৎপাদন, ব্যবহার, বিপণন এবং পরিবহণ নিষিদ্ধ করা হয়। পরবর্তী একটা সময়ে পলিথিনের ব্যবহার অনেকটাই কমে আসে। কিন্তু অসাধু ব্যবসায়ীদের নতুন উদ্যমে পলিথিনকে ফিরিয়ে আনা এবং প্রশাসনের সঠিক তদারকির অভাবে দেশে এখন পলিথিন এবং প্লাস্টিক পণ্য সবখানে। আইনের কার্যকরী কোনো প্রয়োগ নেই। ফলে মারাত্মক বিপর্যয়ের মুখে পরিবেশ ও জনস্বাস্থ্য।
পরিবেশ বিশেষজ্ঞরা বলছেন, রাজধানীর লালবাগ, কামরাঙ্গীরচর ও লালবাগের চান্দিরঘাট পুরো এলাকায় প্রশাসনের নাকের ডগায় অননুমোদিত প্লাস্টিক উৎপাদন ও বিপণন হচ্ছে। ওই এলাকায় প্রকাশ্যে ৯ শতাধিক অবৈধ পলিথিনের উৎপাদন কারখানা রয়েছে বলে পরিবেশ অধিদপ্তরের সংশ্লিষ্ট সূত্র  জানান।
পলিথিন এবং নিম্নমানের প্লাস্টিক পণ্য প্রস্তুতের অন্যতম স্থান রাজধানীর লালবাগসংলগ্ন কামালবাগ ও কামরাঙ্গীরচর। মূলত প্লাস্টিক এবং পলিথিন পণ্য উৎপাদনকারী এসব কারখানা জেগে ওঠে সন্ধ্যা থেকে। ওইসব পলিথিন তৈরীর কারখানা গুলোতে দেশের বিভিন্ন অঞ্চল থেকে আনা ফেলে দেওয়া পলিথিন গলিয়ে এবং প্রক্রিয়াজাত করে নতুন পলিথিন ও নিম্নমানের প্লাস্টিক পণ্য তৈরি করা হচ্ছে। ছোট-বড় কাঁচা দেওয়ালের ঘরগুলোতে একধারে এ কাজ করছেন নারী ও পুরুষ শ্রমিকরা। পুরো কামালবাগ এবং কামরাঙ্গীরচর জুড়েই এ রকম কারখানা। কাজ চালিয়ে গেলেও শ্রমিকদের তটস্থ থাকতে দেখা যায়।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে বিরল উপজেলার কয়েকজন পলিথিন ব্যবসায়ী জানান, ঢাকার  কামালবাগ ও কামরাঙ্গীরচরসহ আশপাশের অনেক জায়গায় পলিথিন এবং নিম্নমানের প্লাস্টিকের পণ্য প্রস্তুত  হয় প্রতিদিনই। সারা দেশের পলিথিন মূলত ওখানেই উৎপাদন হয়। তাঁরা বলেন, পলিথিন উৎপাদন নিষিদ্ধ বলে অনেক জায়গায় খুব ছোট-ছোট ঘরে দরজা লাগিয়ে চলতে থাকে পলিথিনের উৎপাদন।
প্রশাসনের নাকের ডগাতেই বিক্রি হচ্ছে পলিথিন এবং নিম্নমানের প্লাস্টিক পণ্য। এক দোকানিকে বাজারে ব্যবহার হওয়া পলিথিনের দাম জিজ্ঞেস করতেই বলেন, পলিথিনের কেজি ১৫০ টাকা। ১ কেজিতে ১২০ টা বড় পলিথিন হয়। বিভিন্ন সাইজের আছে।
পরিবেশ অধিদপ্তর বলছে, তাদের গবেষণায় দেখা গেছে পলিথিন সবচেয়ে বেশি ব্যবহার হয় সিটি করপোরেশন, জেলা শহর, পৌরসভা ও উপজেলা সদরে। ফলে শহরের পয়নিস্কাশনে নির্মিত ড্রেন এবং শহরসংলগ্ন নদ-নদীগুলোই পলিথিন দূষণের শিকার হচ্ছে বেশি। রাজধানী ও সিটি এলাকা সংলগ্ন  বুড়িগঙ্গা, তুরাগ, বালু, বংশী, শীতলক্ষ্যা, ধলেশ্বরী, বরিশালের কীর্তনখোলা, চট্টগ্রামের কর্ণফুলী ও হালদা নদী, দিনাজপুর শহরের ঘাগড়া, বিরল পৌর শহর সংলগ্ন নোনানদীর তলদেশে পলিথিনের পুরস্তর পড়েছে। এসব নদ-নদীর তলদেশে কয়েক ফুট পুরো পলিথিনের আস্তরণ জমার কারণে নদীর দূষণ তো বটেই, জীববৈচিত্রও ধ্বংস হচ্ছে। পলিথিনের প্রভাবে নদ-নদীর গভীরতা কমে যাচ্ছে, নদ- নদীতে মাছের সংখ্যাও কমে যাচ্ছে। বহু প্রজাতির মাছ ইতোমধ্যে হারিয়ে গেছে।
শহর কিংবা গ্রাম সর্বত্র জলাবদ্ধতা মারাত্মক সমস্যা হিসাবে আবির্ভূত হয়েছে। শহর, গ্রামের পয়ঃনিষ্কাশনে ব্যবহৃত ড্রেন ময়লায় বন্ধ হয়ে জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হচ্ছে। ময়লার মধ্যে সবচেয়ে বড় অংশজুড়ে রয়েছে পলিথিন ও প্লাস্টিক বোতল। ঢাকাসহ বিভিন্ন সিটি, জেলা ও উপজেলা শহরের প্রায় ৯০ শতাংশ ড্রেন পলিথিনে আবদ্ধ। জলাবদ্ধতায় অনেক সময় প্রাণহানির ঘটনা ঘটছে। তবু নাগরিক সচেতনতা দেখা যাচ্ছে না।
বাংলাদেশ ধান গবেষণা ইনস্টিটিউটের গবেষকরা বলছেন, পলিথিন মাটির উর্বরতা শক্তি হ্রাস করে ফসলের ক্ষতি করছে। প্রশাসনের নজরদারি জোড়দার করা হলে নিষিদ্ধ পলিথিন ব্যবহার বন্ধ না হলেও হয়ত কিছুটা নিয়ন্ত্রন করা সম্ভব হতে পারে বলে সচেতন মহল মনে করেন।

এই সাইটে নিজম্ব নিউজ তৈরির পাশাপাশি বিভিন্ন নিউজ সাইট থেকে খবর সংগ্রহ করে সংশ্লিষ্ট সূত্রসহ প্রকাশ করে থাকি। তাই কোন খবর নিয়ে আপত্তি বা অভিযোগ থাকলে সংশ্লিষ্ট নিউজ সাইটের কর্তৃপক্ষের সাথে যোগাযোগ করার অনুরোধ রইলো।বিনা অনুমতিতে এই সাইটের সংবাদ, আলোকচিত্র অডিও ও ভিডিও ব্যবহার করা বেআইনি।

Design & Developed by BD IT HOST