ঢাকাশুক্রবার , ১৯ জানুয়ারি ২০২৪
  1. অগ্নিকান্ড
  2. অনুষ্ঠান
  3. অপরাধ
  4. অবৈধ বালু উত্তোলন
  5. অভিনন্দন
  6. অর্থনীতি
  7. আইন ও বিচার
  8. আওয়ামী লীগ
  9. আওয়ামী লীগে
  10. আক্রান্ত
  11. আটক
  12. আত্মহত্যা
  13. আদালত
  14. আনন্দ মিছিল
  15. আন্তর্জাতিক
আজকের সর্বশেষ সবখবর

পবিত্র কুরআনের অনুবাদে “কানযুল ঈমান”-ই শ্রেষ্ঠ কেন!

তৌসিফ রেজা (বিশেষ প্রতিনিধি)
জানুয়ারি ১৯, ২০২৪ ১২:০৪ পূর্বাহ্ণ
Link Copied!

 

পবিত্র কুরআনের অনুবাদে “কানযুল ঈমান”-ই শ্রেষ্ঠ কেন!

শেখ খুরশিদ আলম (মানিক) নূরী রিজভী

ইমামে আহলে সুন্নাহ,আ’লা হযরত ইমাম আহমাদ রেযা মুহাদ্দিস বেরলভী রহমাতুল্লাহি আলাইহির অনুবাদ কৃত কুরআনই হলো- “কানযুল ঈমান “।
যারা আরবি ভাষা বোঝেন না তারা নিশ্চয়ই পবিত্র কুরআনের রহস্য ও জ্ঞান আরোহনের জন্য একটি বিশুদ্ধ অনুবাদ গ্রন্থ খুঁজছেন? তাহলে আমার পরামর্শ হলো “কানযুল ঈমান” হলো আপনার কাঙ্খিত সেই অনুবাদ গ্রন্থ। যার বিষয়ে আমি হলফ করে বলতে পারি এটি পবিত্র কুরআনের বিশুদ্ধতম অনুবাদ গ্রন্থ। পৃথিবীর বহু ভাষায় বহু গুণীজন পবিত্র কুরআনের অনুবাদ করেছেন। ভারত উপমহাদেশেও বহু ভাষায় পবিত্র কুরআনে অনুবাদ হয়েছে। ভালো করে খোঁজ নিলে হয়তো শুধুমাত্র উর্দু ভাষাতেই শতজনের অনুবাদ পুরো ভারতবর্ষ ব্যাপী পাওয়া যাবে। তবে এ সকল উর্দু অনুবাদের মধ্যে প্রশংসার মুকুটটি যেই অনুবাদের মাথায় সুশোভিত হয়েছে তার নাম আলেম সমাজের সকলেরই জানা আর তা হলো ইমাম আহমদ রেযা খাঁন বেরলভী রহমাতুল্লাহি আলাইহির অনবদ্য সৃষ্টি “কানযুল ঈমান”। এটা পবিত্র কুরআনের অনন্য অনুবাদগ্রন্থ।জ্ঞানগরিমার দরুন ইমাম আহমদ রেযা খাঁন বেরলভী রহমাতুল্লাহি আলাইহির যেমন তার যুগে অন্যান্য হযরতের মধ্যে “আ’লা” তেমনি তাঁর অনূদিত পবিত্র কুরআনের উর্দু অনুবাদ “কানযুল ঈমানও” অন্যান্য হযরতের অনুবাদের মধ্যে “আ’লা”। কারণটাও একেবারে দিবালোকের ন্যায় সুস্পষ্ট, আর তা হলো এই অনুবাদে যেভাবে মহান আল্লাহ তা’আলার তৌহিদের সংরক্ষণ,নুরনাবী হযরত মুহাম্মাদ সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের প্রতি আদব ও সম্মান এবং আহলে সুন্নাত ওয়াল জামায়াতের আকিদাহ ও আমলের তাহফ্ফুয হয়েছে তা অন্য কোন অনুবাদে সচরাচর দেখা যায় না। এই অনুবাদটি শুধু শাব্দিক অর্থের সমষ্টি নয় বরং এটা পরিপূর্ণ আহলে সুন্নাত ওয়াল জামায়াতের আকিদাহর আয়না। উর্দু ভাষায় ইমামের এই অনুবাদকে তরজমা সমূহের “ইমাম” বললেও অতুক্তি হবে না। পূর্ববর্তী জগৎ বিখ্যাত মুফাসসিরদের তাফাসির গুলোর সারনির্যাস রয়েছে “কানযুল ঈমান” অনুবাদটিতে।এই অনুবাদ যে কতটা উচ্চাঙ্গের অনুবাদ তা বুঝতে এতোটুকুই যথেষ্ঠ যে, এই অনুবাদটির অনন্যতার ওপর ড.মাজিদুল্লাহ কাদরী ১৯৯৩ সালে কারাচী বিশ্ববিদ্যালয় হতে “Comparison of Kanzul Iman and other renown Urdu translations of Qur’an” শিরোনামে পি এইচ ডি ডিগ্রি অর্জন করেছিলেন আলহামদু লিল্লাহি।

এবার আসুন “কানযুল ঈমান” কিভাবে আমাদের ঈমানকে সংরক্ষণ করেছে তার একটু ঝলক আপনাদের দেখাই। পবিত্র কুরআনের অনুবাদ করতে গিয়ে এমন অনুবাদও করা হয়েছে যা মনে প্রাণে বিশ্বাস করলে ঈমান চলে যাবে। যেমন: আল্লাহর জন্য “ছলনা” শব্দের ব্যবহার, যা দ্বারা বোঝা যায় আল্লাহও ছলনাকারী (নাউজুবিল্লাহ)। বাতিল ফের্কার নিকট খুবই সমাদৃত একটি অনুবাদ হলো “মা’আরেফুল কুরআন”, এই অনুবাদের সূরা আনফাল আয়াত নং ৩০-এর অনুবাদ করা হয়েছে কিছুটা এরকম-” তখন তারা যেমন ছলনা করতো তেমনি,আল্লাহও ছলনা করতেন। বস্তুত আল্লাহর ছলনা সবচেয়ে উত্তম।” (“মা’আরেফুল কুরআন”, খাদেমুল-হারামাইন বাদশাহ ফাহাদ কোরআন মুদ্রণ প্রকল্প,পৃষ্ঠা নং-৫২৭)

এই অনুবাদ দেখার পরে,এখন আপনি নিজেই বিবেচনা করুন মহান আল্লাহর শানে ছলনা,প্রতারণা, ষড়যন্ত্র ও ধোঁকা দেয়া শব্দগুলো কি ঈমান রক্ষার সহায়ক নাকি ঈমান বিধ্বংসী? অথচ আ’লা হযরত ইমাম আহমদ রেযা খান রহমাতুল্লাহি আলাইহি তাঁর কানযুল ঈমানে উক্ত আয়াতটির তরজমা এতো সুন্দর করে করেছেন যে একদিকে যেমন ঈমান রক্ষা পাচ্ছে ঠিক তার অপর দিকে আল্লাহর সুমহান শান-মানও প্রকাশিত হচ্ছে। তিনি অনুবাদ করেন-

اور وہ اپنا سا مکر کرتے تھے اور اللہ اپنی خفیہ تدبیر فرماتا تھا اور اللہ کی خفیہ تدبیر سب سے بہتر،

” এবং তারা নিজেদের মতো ষড়যন্ত্র করছিল আর আল্লাহ নিজের গোপন কৌশল করছিলেন এবং আল্লাহ এর গোপন কৌশল সর্বাপেক্ষা উত্তম।”

এছাড়াও উক্ত “মা’আরেফুল কুরআন”-এ সূরা আ’রাফের আয়াত নং ৫১-এর শেষের দিকে অনুবাদ করা হয়েছে কিছুটা এরকম-” অতএব,আমি আজকে তাদেরকে ভুলে যাবো ;যেমন তারা এ দিনের সাক্ষাৎকে ভুলে গিয়েছিল এবং যেমন তারা আয়াতসমূহকে অবিশ্বাস করত।”

(“মা’আরেফুল কুরআন”,খাদেমুল-হারামাইন বাদশাহ ফাহাদ কোরআন মুদ্রণ প্রকল্প,পৃষ্ঠা নং-৪৪৩)

আর আ’লা হযরত ইমাম আহমদ রেযা খান রহমাতুল্লাহি আলাইহি তাঁর “কানযুল ঈমান”-এ উক্ত আয়াতটির অনুবাদ করেন-

تو آج ہم انہیں چھوڑ دیں گے جیسا انہوں نے اس دن کے ملنے کا خیال چھوڑا تھا اور جیسا ہماری آیتوں سے انکار کرتے تھے،

“সুতরাং আজ আমি তাদেরকে পরিত্যাগ করবো যেমনি তারা এ দিনের সাক্ষাতের ধারণাকে পরিত্যাগ করেছিলো এবং যেমনি আমার নিদর্শন গুলোকে অস্বীকার করছিলো। ”

উভয় অনুবাদ দেখার পর,এখন ফায়সালা আপনার বিবেকের কাছে,কোন অনুবাদটি ঈমানের সহায়ক এবং শ্রেষ্ঠ,”কানযুল ঈমান” নাকি “মা’আরেফুল কুরআন”? মহান আল্লাহ কি কস্মিনকালের জন্য কোন কিছু ভুলে যেতে পারেন? তাঁর জন্য কি ভুলে যাওয়া সম্ভব? এরকম অনুবাদ কি ঈমানের জন্য হুমকি নয়? অথচ আ’লা হযরত ইমাম আহমদ রেযা খাঁন রহমাতুল্লাহি আলাইহি কত সুন্দর অনুবাদ করলেন,তিনি লিখলেন-মহান আল্লাহ কাফিরদেরকে তাদের অপকর্মে জন্য “পরিত্যাগ করবেন”।

এছাড়াও উক্ত ” মা’আরেফুল কুরআন”-এ সূরা আলে ইমারানের ১৪২ নং আয়াতের অনুবাদ করা হয়েছে কিছুটা এরকম-” তোমাদের কি ধারণা, তোমরা জান্নাতে প্রবেশ করবে,অথচ আল্লাহ এখনও দেখেননি তোমাদের মধ্যে কারা জিহাদ করেছে এবং কারা ধৈর্যশীল”।

(“মা’আরেফুল কুরআন”,খাদেমুল-হারামাইন বাদশাহ ফাহাদ কোরআন মুদ্রণ প্রকল্প,পৃষ্ঠা নং-২০৭)

আর কানযুল ঈমানে আ’লা হযরত রহমাতুল্লাহি আলাইহি উক্ত আয়াতের অনুবাদ করছেন –

کیا اس گمان میں ہو کہ جنت میں چلے جاؤ گے اور ابھی اللہ نے تمہارے غازیوں کا امتحان نہ لیا اور نہ صبر والوں آزمائش کی

” (তোমরা) কি এ ধারণায় রয়েছো যে,জান্নাতে চলে যাবে আর এখনো আল্লাহ্‌ তোমাদের গাযীদের পরীক্ষা করেন নি এবং না ধৈর্যশীলদেরকেও পরীক্ষা করেছেন?”

উভয় অনুবাদ দেখার পরে বলুন,কারো পরীক্ষা পরবর্তী নেয়া আর কারো বিষয়ে না দেখা আর না জানা কি এক বিষয়? মহান আল্লাহ এখন দেখেননি বলে এরকম অনুবাদ কি ঈমানের বিপরীত নয়? মহান আল্লাহর জন্য কোন কিছুই গোপন নেই, তিনি সব কিছু জানেন আর সব কিছুই দেখেন। আলহামদু লিল্লাহ এই সংক্ষিপ্ত আলোচনা দ্বারা এটাই প্রমাণিত হল যে,”কানযুল ঈমান” কুরআনের অন্যন্য অনুবাদগ্রন্থ এবং “কানযুল ঈমান” আসলেই কানযুল ঈমান (ঈমানের ভান্ডার/খনি)।

এই সাইটে নিজম্ব নিউজ তৈরির পাশাপাশি বিভিন্ন নিউজ সাইট থেকে খবর সংগ্রহ করে সংশ্লিষ্ট সূত্রসহ প্রকাশ করে থাকি। তাই কোন খবর নিয়ে আপত্তি বা অভিযোগ থাকলে সংশ্লিষ্ট নিউজ সাইটের কর্তৃপক্ষের সাথে যোগাযোগ করার অনুরোধ রইলো।বিনা অনুমতিতে এই সাইটের সংবাদ, আলোকচিত্র অডিও ও ভিডিও ব্যবহার করা বেআইনি।