ঢাকাশনিবার , ৩০ মার্চ ২০২৪
  1. অগ্নিকান্ড
  2. অনুষ্ঠান
  3. অপরাধ
  4. অবৈধ বালু উত্তোলন
  5. অভিনন্দন
  6. অর্থনীতি
  7. আইন ও বিচার
  8. আওয়ামী লীগ
  9. আওয়ামী লীগে
  10. আক্রান্ত
  11. আটক
  12. আত্মহত্যা
  13. আদালত
  14. আনন্দ মিছিল
  15. আন্তর্জাতিক
আজকের সর্বশেষ সবখবর

পদ্মা সেতু হয়ে যশোরে দ্রুতগতির ট্রেন

admin
মার্চ ৩০, ২০২৪ ৭:৩৬ অপরাহ্ণ
Link Copied!

আবুল হাসান,সম্পাদক- ফরিদপুরের ভাঙ্গা উপজেলার বামনকান্দা রেল জংশন থেকে যশোরের রূপদিয়ার উদ্দেশে ছেড়ে গেল উচ্চক্ষমতা সম্পন্ন পরীক্ষামূলক ট্রেন। ট্রেনটির চালক হিসেবে ছিলেন সাখাওয়াত হোসেন।
শনিবার (৩০ মার্চ) সকাল ৮.৪০ মিনিটে ভাঙ্গার বামনকান্দা রেল জংশন থেকে ১২০ কিলোমিটার গতি নিয়ে ট্রেনটি ছেড়ে যায়।
পরীক্ষামূলক ট্রেন যাত্রায় উপস্থিত হয়ে পর্যবেক্ষণ করেন রেল প্রকল্পে চায়না ইঞ্জিনিয়ার, সেনাবাহিনী ও রেল প্রকল্পে ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা।
নতুন রেললাইন চালু হওয়ার সংবাদে রেললাইনের আশপাশের মানুষের মধ্যে চলছে উৎসবের আমেজ।
এ বিষয়ে ভাঙ্গার রেলস্টেশন মাস্টার জিল্লুর রহমান জানান, শনিবার সকাল ৮.৪০ মিনিটে উচ্চ গতি সম্পন্ন এই পরীক্ষামূলক ট্রেনটি যশোরের রূপদিয়ার উদ্দেশ্যে ছেড়ে যায়। ট্রেনটি ১২০ কিলোমিটার গতিতে যশোর পৌঁছাইতে সময় লাগবে মাত্র এক ঘণ্টা। পরদিন আবারও ৩১ মার্চ সকালে রূপদিয়া রেল স্টেশনের উদ্দেশ্যে ছেড়ে যাবে। আবার যশোর থেকে ভাঙ্গার উদ্দেশ্যে ছেড়ে আসবে। এভাবে কয়েকবার পরীক্ষামূলক ট্র্যায়েল ট্রেন চলাচল করবে।
দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের মানুষের। পদ্মা সেতু হয়ে রেলপথে রাজধানীতে পৌঁছানোর যশোরবাসীর স্বপ্ন এখন বাস্তব।সড়কপথের পর এবার ট্রেনে সহজে ঢাকায় যাওয়ার আরও এক ধাপ অগ্রগতি হলো। ফরিদপুরের ভাঙ্গা থেকে যশোরের রূপদিয়া পর্যন্ত শনি (৩০ মার্চ) ও রোববার দুটি ট্রায়াল রান হচ্ছে । এর মধ্যেদিয়ে পদ্মা সেতু হয়ে যশোর-ঢাকার রেল যোগাযোগের নতুন দিগন্ত উন্মোচিত হলো।
বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন চায়না রেলওয়ে গ্রুপ লিমিটেডের সাইট ইঞ্জিনিয়ার মহিদুল ইসলাম।
সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, ফরিদপুরের ভাঙ্গা থেকে যশোরের রূপদিয়া পর্যন্ত ট্রায়াল রানের সম্ভাব্য সময় ধরা হয়েছিল ভাঙ্গা থেকে সকাল ৯টা। ৮৩ দশমিক ৩ কিলোমিটার পথ কোনোরকম বিরতি ছাড়াই ৪০-৪৫ মিনিটে রূপদিয়া পৌঁছায়। এখানে কিছুটা সময় পর্যালোচনার পর দুপুর নাগাদ ফের ট্রেনটি ভাঙ্গায় ফিরে যায়। রোববারও (৩১ মার্চ) একই শিডিউল থাকবে।
নতুন এ রুটে ট্রেন চলাচল শুরু। এই রেলপথে যশোর থেকে ঢাকার দূরত্ব কমলো ১৯৩ কিলোমিটার। ঘণ্টায় ১২০ কিলোমিটার গতিতে ব্রডগেজ রেললাইন দিয়ে চলেছে ট্রেন। রূপদিয়া থেকে ট্রেনের কোনোটির গতিপথ যশোর হয়ে বেনাপোল, আবার কোনোটি খুলনা অভিমুখে যাবে।
ঢাকা-ভাঙ্গা হয়ে খুলনা, যশোর ও বেনাপোল রুটে বর্তমানে ট্রেন চলাচল চালু আছে। এতে দূরত্ব কমেছে তিন ঘণ্টার মতো। আর রূপদিয়া থেকে সরাসরি রেল সংযোগ চালু হলে আড়াই থেকে তিন ঘণ্টায় ঢাকা পৌঁছে যাবে ট্রেন। সড়কপথে যশোর থেকে ঢাকা সময় লাগে মাত্র সাড়ে তিন ঘণ্টা, যা আগের চেয়ে প্রায় অর্ধেক সময়।
রেলপথটি ঢাকার কমলাপুর থেকে শুরু হয়ে নারায়ণগঞ্জ, মুন্সীগঞ্জ, মাদারীপুর, শরীয়তপুর, ফরিদপুর, গোপালগঞ্জ এবং নড়াইলের ওপর দিয়ে যশোর গিয়ে শেষ হবে। চলমান রেললিংক প্রকল্প শেষে যশোর থেকে আড়াই থেকে তিন ঘণ্টায় ঢাকায় যাওয়া সম্ভব। এতে পরিবেশবান্ধব ও অধিকতর নিরাপদ ট্রেন যাত্রায় মানুষের চলাচলের গতিতে নতুন মাত্রা যুক্ত হবে। এজন্য রাত-দিনে যথাসম্ভব বেশি ট্রেন চালুর দাবি জানিয়েছেন এ বঙ্গের সাধারণ মানুষ।
বাংলাদেশ রেলওয়ে যশোর কার্যালয়ের সহকারী নির্বাহী প্রকৌশলী গৌতম বিশ্বাস বলেন, পদ্মা সেতুর সাথে মূল লাইনের সংযোগ দেওয়ার সময় আমরা যুক্ত ছিলাম। সংযোগের পর পুরোটাই এখন পর্যন্ত প্রকল্প সংশ্লিষ্টরা দেখছেন। তবে আমরা এখনো অপারেশনাল দায়িত্বে যুক্ত হইনি।
চায়না রেলওয়ে গ্রুপ লিমিটেডের সাইট ইঞ্জিনিয়ার মহিদুল ইসলাম বলেন, পদ্মা রেললিংক প্রজেক্টের ডিভিশন টু ইউনিট ফাইভের তিনটি রেলস্টেশনের মধ্যে রূপদিয়া ও পদ্মবিলা স্টেশনের রেল ট্র্যাকের কাজ শেষ হয়েছে। সিঙ্গিয়া স্টেশনের কাজও শেষ হওয়ার কাছাকাছি। তবে স্টেশনের কিছু ফিনিশিংয়ের কাজ চলছে। ১৫ এপ্রিল প্রকল্পের মেয়াদ হবে। এরমধ্যেই সব কাজ শেষ হয়ে যাবে বলে আশা করছি।
ট্রায়াল রানে বাংলাদেশ রেলওয়ের কর্মকর্তা, চায়না রেলওয়ে গ্রুপ লিমিটেডের কর্মকর্তা এবং প্রকল্প কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
পদ্মা সেতু রেল সংযোগ প্রকল্পটির সেফটি অফিসার মো. নাঈম কাজী জানান, জুনে নির্ধারিত থাকলেও এর আগেই নতুন রুটে ঢাকা থেকে যশোর পর্যন্ত ট্রেন চলছে।
প্রকল্পটি পুরোপুরি বাস্তবায়ন হলে দেশের বৃহৎ স্থলবন্দর বেনাপোল, বাণিজ্যিক শহর নওয়াপাড়া ও শিল্পাঞ্চল খুলনাসহ দেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের মানুষের যাতায়াত, পণ্য পরিবহনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে। ফলে বদলে যাবে এ এলাকার আর্থ-সামাজিক অবস্থাও।
চায়না রেলওয়ে গ্রুপ লিমিটেডের তথ্যমতে, ঢাকা থেকে পদ্মা সেতু হয়ে যশোর পর্যন্ত ১৭২ কিলোমিটার নতুন রেলপথ নির্মাণে ৪১ হাজার কোটি টাকা বরাদ্দ রয়েছে। এর মধ্যে ২১ হাজার কোটি টাকা বিনিয়োগ চীনের।বাংলাদেশের বিনিয়োগ ২০ হাজার কোটি টাকা। যশোর পর্যন্ত নতুন রুটে রয়েছে মধুমতি, চিত্রা, তুলারামপুর, আফরাসহ ভাঙ্গা থেকে যশোর পর্যন্ত ছোটবড় ৩২টি রেল সেতু, ৮৬টি কালভার্ট, ৮২টি আন্ডারপাস।
পদ্মা রেল সংযোগ প্রকল্পে কমলাপুর থেকে যশোর পর্যন্ত ২০টি স্টেশন নির্মাণ করা হচ্ছে। এরমধ্যে ১৪টি স্টেশনই হচ্ছে আধুনিক ও নতুন। পুরোনো ছয়টি স্টেশনকে আধুনিক ও যুগোপযোগী করা হচ্ছে। মাওয়া, কাশিয়ানি, রূপদিয়া, পদ্মবিলা স্টেশনে অপারেশনাল সুবিধা বাড়ানো হয়েছে। কাজ তদারকি করছে সিএসসি বাংলাদেশ সেনাবাহিনী। প্রকল্পটির গুণগত মান সঠিক রেখে দ্রুত বাস্তবায়ন হচ্ছে।
পদ্মা সেতু হয়ে যশোর পর্যন্ত রেল চলাচল প্রকল্পের ঢাকা-ভাঙ্গা পর্যন্ত রেলপথ গতবছরের ১০ অক্টোবর উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। পদ্মা সেতু অতিক্রম করে চালু হওয়া ঢাকা থেকে ভাঙ্গা রুটে নিয়মিত চলাচল করছে ট্রেন। আর যশোর পর্যন্ত নতুন রুট চালু হলো এদিন। নির্ধারিত সময়ের আগেই ঢাকা-যশোর রুটে ট্রেন চলাচল শুরু। এখন শুধু দূরত্বই নয়, ট্রান্স এশিয়া রেলওয়ে নেটওয়ার্কে যুক্ত হওয়ার পথে আরেক ধাপ এগিয়ে যাচ্ছে বাংলাদেশ।
দ্রতগতির এ রেল নেটওয়ার্কে বাংলাদেশ রেল বিশেষ উচ্চতায় আসীন। পদ্মা সেতুর সুফল আরও ব্যাপকভাবে ছড়িয়ে গেলো। একইসঙ্গে বৈদেশিক বাণিজ্য বৃদ্ধির পাশাপাশি আর্থ-সামাজিক উন্নয়নের ক্ষেত্রে এ রেলপথ বিশেষ ভূমিকা রাখবে বলে বিশেষজ্ঞদের অভিমত।

এই সাইটে নিজম্ব নিউজ তৈরির পাশাপাশি বিভিন্ন নিউজ সাইট থেকে খবর সংগ্রহ করে সংশ্লিষ্ট সূত্রসহ প্রকাশ করে থাকি। তাই কোন খবর নিয়ে আপত্তি বা অভিযোগ থাকলে সংশ্লিষ্ট নিউজ সাইটের কর্তৃপক্ষের সাথে যোগাযোগ করার অনুরোধ রইলো।বিনা অনুমতিতে এই সাইটের সংবাদ, আলোকচিত্র অডিও ও ভিডিও ব্যবহার করা বেআইনি।