
মোঃ পলাশ শেখ, কাজিপুর (সিরাজগঞ্জ)
সিরাজগঞ্জ জেলার কাজিপুর উপজেলার ১২ নম্বর মুনসুর নগর ইউনিয়নের সরকার ঘোষিত কাবিখা (কাজের বিনিময়ে খাদ্য), কাবিটা (কাজের বিনিময়ে টাকা) ও টিআর (টেস্ট রিলিফ) প্রকল্পে ভয়াবহ অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগ উঠেছে। এসব প্রকল্পের মূল লক্ষ্য ছিল দরিদ্র জনগোষ্ঠীর জীবনমান উন্নয়ন ও অবকাঠামো গড়ে তোলা। অথচ বাস্তবে সেগুলো পরিণত হয়েছে লুটপাটের উৎসে—এমনটাই অভিযোগ স্থানীয়দের।
স্থানীয়রা জানান, ইউনিয়নের প্যানেল চেয়ারম্যান সোনিয়া খাতুনের প্রত্যক্ষ তদারকিতে এসব প্রকল্পে বরাদ্দকৃত অর্থের অপচয় ও আত্মসাৎ হয়েছে। কাগজে-কলমে রাস্তা সংস্কার, ড্রেন নির্মাণ, ইট বিছানোসহ একাধিক প্রকল্প দেখানো হলেও বাস্তবে সেসবের তেমন কোনো অস্তিত্ব নেই।
প্রকল্প এলাকায় নেই সাইনবোর্ড, কোথাও আবার কাজের নাম উল্লেখ না করেই চলেছে লক্ষ টাকার বিল উত্তোলন। এমনকি কিছু প্রকল্পে কার্যত কোনো কাজই হয়নি, শুধু কাগজে বিল উঠিয়ে অর্থ আত্মসাৎ করা হয়েছে বলে অভিযোগ।
অন্যদিকে, কিছু জায়গায় যেটুকু কাজ হয়েছে, সেখানেও ব্যবহার করা হয়েছে অত্যন্ত নিম্নমানের নির্মাণসামগ্রী। কোনো প্রকল্পে নেই প্রকৌশল বিভাগের তদারকি বা স্থানীয় কমিটির অংশগ্রহণ—সব মিলিয়ে স্বচ্ছতার অভাব চরম পর্যায়ে।
স্থানীয় সচেতন নাগরিকরা বলেন, জনসেবার নামে এই দুর্নীতি শুধু অর্থ আত্মসাৎ নয়, এটি জনগণের সঙ্গে বিশ্বাসঘাতকতা। সরকারের উন্নয়ন পরিকল্পনার সুফল জনগণের দোরগোড়ায় পৌঁছানোর কথা থাকলেও দুর্নীতিগ্রস্ত জনপ্রতিনিধিদের কারণে তা সম্ভব হচ্ছে না।
বিষয়টি নিয়ে জানতে চাইলে অভিযুক্ত প্যানেল চেয়ারম্যান সোনিয়া খাতুনের সঙ্গে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তিনি ফোন রিসিভ করেননি এবং সাক্ষাৎকারও দেননি। এলাকাবাসীর দাবি, প্রকল্পগুলো তদন্ত করে জড়িতদের বিরুদ্ধে দ্রুত আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হোক। অনেকেই অভিযোগ দাখিলের প্রস্তুতি নিচ্ছেন বলে জানা গেছে। সচেতন নাগরিকদের প্রতি আহ্বান:আপনার এলাকায় এ ধরনের অনিয়ম বা দুর্নীতি দেখলে তা চেপে না রেখে লিখিত অভিযোগ করুন। তথ্য-প্রমাণসহ জানান স্থানীয় গণমাধ্যম, প্রশাসন বা দুর্নীতি দমন কমিশনে। আপনার একটি উদ্যোগই হতে পারে দুর্নীতিমুক্ত সমাজ গঠনের পথে প্রথম পদক্ষেপ।