
মোঃ শাহজাহান বাশার, সিনিয়র স্টাফ রিপোর্টার
আজ বৃহস্পতিবার সকালে প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত উপদেষ্টা পরিষদের নিয়মিত বৈঠকটি শুরু হয় এক শোকাবহ পরিবেশে। রাজধানীর মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজে সম্প্রতি সংঘটিত মর্মান্তিক বিমান দুর্ঘটনায় নিহত শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের স্মরণে বৈঠকে সর্বপ্রথম শোক প্রস্তাব গৃহীত হয়। নিহতদের আত্মার মাগফিরাত কামনা করে এক মিনিট নীরবতা পালন করা হয় এবং তাঁদের সম্মানে বিশেষ দোয়া ও মোনাজাত করা হয়।
নিহতদের পরিবার ও আহতদের সহায়তায় সরকার সর্বাত্মক থাকবে
বৈঠকে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়, এই দুঃখজনক ঘটনায় নিহতদের পরিবার এবং আহতদের চিকিৎসা ও পুনর্বাসনে সরকার প্রয়োজনীয় সকল সহায়তা প্রদান করবে। এই লক্ষ্যে শিক্ষা মন্ত্রণালয়কে স্কুল কর্তৃপক্ষের সঙ্গে ঘনিষ্ঠভাবে কাজ করে ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারের পাশে দাঁড়ানোর নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।
সরকারি সহায়তার আওতায় থাকবে-নিহতদের পরিবারকে আর্থিক ও মনোসামাজিক সহায়তা,আহতদের চিকিৎসা ব্যয় বহন ও পুনর্বাসন
মাইলস্টোন স্কুলের অবকাঠামোগত ও নিরাপত্তা সংস্কার বিষয়ে আলাপ-আলোচনা
উপদেষ্টা পরিষদের বৈঠকে আরও একটি তাৎপর্যপূর্ণ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে—দুর্ঘটনায় নিহত দুই শিক্ষককে (নাম প্রকাশ করা হয়নি) রাষ্ট্রীয় সম্মাননায় ভূষিত করা হবে। তাঁদের জীবনের আত্মত্যাগ ও শিক্ষা খাতে অবদানের স্বীকৃতিস্বরূপ এই সম্মাননা প্রদানের প্রক্রিয়া দ্রুততম সময়ে সম্পন্ন করা হবে। সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের মাধ্যমে সম্মাননার ধরণ, আনুষ্ঠানিকতা ও হস্তান্তরের সময়সূচি নির্ধারণ করা হবে বলে জানানো হয়েছে।
নিহতদের আত্মার শান্তি এবং আহতদের দ্রুত আরোগ্য কামনায় আগামীকাল শুক্রবার দেশের সকল ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানে বিশেষ প্রার্থনার আয়োজন করার সিদ্ধান্তও গৃহীত হয়েছে। এ উপলক্ষে ধর্ম মন্ত্রণালয় প্রয়োজনীয় দিকনির্দেশনা ও সমন্বয় করবে।
এই বিশেষ প্রার্থনা আয়োজনের মধ্য দিয়ে জাতি হিসেবে আমরা একটি অভিন্ন শোক ও প্রার্থনার বন্ধনে আবদ্ধ হতে পারব—এমনটাই প্রত্যাশা জানিয়েছে উপদেষ্টা পরিষদ।
এই মর্মান্তিক বিমান দুর্ঘটনা শুধুমাত্র একটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের নয়, গোটা জাতির জন্যই এক গভীর ক্ষত। উপদেষ্টা পরিষদের আজকের বৈঠকে গৃহীত সিদ্ধান্তগুলো কেবলমাত্র প্রশাসনিক আনুষ্ঠানিকতা নয়, বরং নিহতদের প্রতি শ্রদ্ধা, আহতদের প্রতি সহমর্মিতা এবং ভবিষ্যতের জন্য একটি মানবিক রাষ্ট্র গড়ার প্রতিশ্রুতি বহন করে।