
বিজয় কর রতন, মিঠামইন (কিশোরগঞ্জ) প্রতিনিধি
ইটনায় উপজেলা কৃষক দলের দ্বিবার্ষিক সম্মেলনে বক্তব্য দিচ্ছেন বিএনপি চেয়ারপাসনের উপদেষ্টা বীর মুক্তিযোদ্ধা অ্যাডভোকেট ফজলুর রহমান। ইটনায় উপজেলা কৃষক দলের দ্বিবার্ষিক সম্মেলনে বক্তব্য দিচ্ছেন বিএনপি চেয়ারপাসনের
উপদেষ্টা বীর মুক্তিযোদ্ধা অ্যাডভোকেট ফজলুর রহমান। মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের সব শক্তিকে খালেদা জিয়া, তারেক রহমান ও বিএনপির নেতৃত্বে এক হওয়ার আহ্ধসঢ়;বান জানিয়েছেন বিএনপি চেয়ারপাসনের উপদেষ্টা বীর মুক্তিযোদ্ধা অ্যাডভোকেট ফজলুর রহমান।
তিনি বলেন, ‘স্বাধীনতাবিরোধী শক্তি জামায়াত-শিবির থেকে দেশবাসীকে সাবধান হতে হবে।’ শনিবার রাতে কিশোরগঞ্জের হাওর অধ্যুষিত উপজেলা ইটনায় উপজেলা কৃষক দলের দ্বিবার্ষিক সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় এই আহ্ধসঢ়;বান জানান তিনি। ফজলুর রহমান বলেন, ‘যে অন্যায়, অবিচার ও দুর্নীতি করেছে আওয়ামী লীগ, তাদের পক্ষে আওয়ামী লীগের ‘আ’ লিখতেও ১০বছর সময় লাগবে। যারা দেশকে লুট করেছে তাদের আর মানুষ ভোট দেবে না। তবে মুক্তিযুদ্ধের প্রশ্নে আমাদের বা আমার কোনো আপস নেই। জামায়াতে ইসলামী যে মুক্তিযুদ্ধ ও স্বাধীনতা সংগ্রামকে অস্বীকার করে এর বিরুদ্ধে আমাদের লড়াই চলবে। কারণ আমি মুক্তিযোদ্ধা। আমি একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধে কমান্ডার ছিলাম। বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা, স্বাধীনতার ঘোষক জিয়াউর রহমানও একজন খেতাবধারী বীর মুক্তিযোদ্ধা। সেক্টর কমান্ডার।’ ফজুলুর রহমান জামায়াত-শিবিরের তীব্র সমালোচনা করে বলেন,
‘তারা দাবি করে এ দেশে মুক্তিযুদ্ধ বলতে কিছু হয়নি। এটা ইন্ডিয়া গন্ডগোল লাগিয়ে দিয়েছে। অথচ আমার দেশের ৩০ লাখ লোক মরে গেছে। আমাদের এখানে একদিনে ৫০০ লোককে গুলি করে হত্যা করেছে তারা। এরপরেও তারা বলে মুক্তিযুদ্ধ হয় নাই এবং তাদের ছাত্রশিবির বলে যারা অস্ত্র হাতে যুদ্ধ করেছ, তাদের আল্লাহর কাছে মাফ চাইতে হবে। তখন আমি আর সহ্য করতে পানি নাই।
কারণ আমি এ এলাকার মুক্তিযোদ্ধাদের কমান্ডার ছিলাম।’এ প্রসঙ্গে ফজলুর রহমান আরও বলেন, ‘আমার নাম শুনলে রাজকাররা ভয়ে পালিয়ে যেত। সেই? ছাইড়া দিলে ৩০ লাখ শহীদের প্রতি বেঈমানি করা হবে। তাদের রক্ত ও স্বপ্নের সঙ্গে বেঈমানি করা হবে। কাজেই আমাকে মুক্তিযুদ্ধের পক্ষে দাঁড়াতেই হবে।’ তারেক জিয়ার সম্পর্কে বাজে কথা ও স্লোগান দেওয়া সম্পর্কে অ্যাডভোকেট ফজলুর রহমান বলেন, ‘আওয়ামী লীগও তারেক জিয়া সম্পর্কে এমন বাজে কথা বা বিশ্রী স্লোগান দেওয়ার সাহস পায়নি, যা জামায়াতুশিবির রাজাকাররা দিয়েছে। এ কারণে জামায়াতুশিবির থেকে সাবধান। রাজাকার আলবদর থেকে সাবধান। আমরা এসব বাজে কথার কঠিন জবাব সময়ে দেব। ওরা নির্বাচন চায় না, এরা সচিবালয়, ডিসি অফিস, ইউএনও অফিস, থানা সব দখলে নিয়েছে। তারা নাকি তাদের লোক। দেশকে বিপদে ফেলতেই তারা নানা ধরনের ষড়যন্ত্র করে চলেছে। তবে আমরা তা হতে দেব না।’ এখনও মুক্তিযোদ্ধারা জীবিত আছে উল্লেখ করে এই বিএনপি নেতা বলেন, ‘প্রয়োজনের আবার
যুদ্ধ হবে। কিন্তু আমার পূর্বপুরুষের রক্ত দিয়ে যে দেশ আমরা স্বাধীন করেছি, সেই স্বাধীনতা ও মুক্তিযুদ্ধকে কোনোদিন বাদ দিতে পারব না। ভুলতে পারব না।’ সম্মেলনে ফজলুর রহমান উপস্থিত নেতাকর্মীদের কাছে প্রশ্ন রাখেন, ‘মুক্তিযুদ্ধ ঠিক না
বেঠিক? মুক্তিযুদ্ধ ভালো না রাজাকার ভালো।’ তখন নেতাকর্মীরা দু’হাত তুলে জবাব দেয়, ‘মুক্তিযোদ্ধা ও মুক্তিযুদ্ধ ভালো।’ এ সময় নেতাকর্মীরা সমস্বরে স্লোগান দেয়, ‘জামায়াতুশিবির রাজাকার/ এই মুহূর্তে বাংলা ছাড়।’ ফজলুর রহমানও তখন তাদের সঙ্গে গলা মেলান।
শনিবার বিকেল ৫টা থেকে কৃষকদলের নেতাকর্মীরা ঢাক-ঢোল পিটিয়ে নেচেগেয়ে সম্মেলনে যোগ দিতে থাকে। ফলে সম্মেলনস্থলে এক উৎসবমুখর পরিবেশ সৃষ্টি হয়। বিকেল সাড়ে ৫টার দিকে সম্মেলনের কার্যক্রম শুরু হয়। সম্মেলনে কয়েক হাজার নেতাকর্মী অংশ নেয়, সম্মেলন গভীর রাত পযর্ন্ত চলে। ইটনা কলেজ মাঠে আয়োজিত উপজেলা কৃষক দলের দ্বিবার্ষিক সম্মেলনে সভাপতিত্ব করেন উপজেলা কৃষকদলের আহ্ধসঢ়;বায়ক মো. হাবিবুল হান্নান। উপজেলা কৃষকদলের
সদস্য সচিব মাহফুজুর রহমান ও যুগ্ম-আহ্ধসঢ়;বায়ক মো. ছাইদুর রহমানের সঞ্চালনায় সম্মেলনে অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য দেন, কৃষকদলের কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক সালাউদ্দিন খান মিল্কী, জেলা বিএনপির সহ-সভাপতি উম্মে কুলসুম রেখা, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আমিনুল ইসলাম রতন, জেলা কৃষকদলের আহ্ধসঢ়;বায়ক মাজহারুল ইসলাম, সদস্য সচিব ওবায়দুল্লাহ ওবায়েদ, ইটনা উপজেলা বিএনপির সভাপতি এসএম কামাল হোসেন, সাধারণ সম্পাদক সিদ্দিজুজ্জামান ঠাকুর স্বপন,
যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক পলাশ রহমান, সাংগঠনিক সম্পাদক তরিকুল ইসলাম জুয়েল, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক সুমেশ ঘোষ প্রমুখ।