
শুভ্র মজুমদার, কালিহাতী (টাঙ্গাইল) প্রতিনিধি
টাঙ্গাইলের কালিহাতী বাসস্ট্যান্ডের যাত্রী ছাউনিটি আজ আর নিরাপদ আশ্রয় নয় এটা যেন পরিণত হয়েছে এক নীরব, অদৃশ্য মৃত্যু ফাঁদে। প্রতিদিন শত শত মানুষ—নারী, পুরুষ, শিশু ও বৃদ্ধ—এই ছাউনির নিচে দাঁড়ান; কেউ যানবাহনের জন্য অপেক্ষা করেন, কেউ বা আশ্রয় নেন রোদ-বৃষ্টি থেকে বাঁচতে। কেউ আবার ফল, পান কিংবা নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসপত্র কিনে নেন পাশের ভ্রাম্যমাণ দোকানগুলো থেকে।
তাদের মাথার উপর ঝুলে আছে একটি ঝুঁকিপূর্ণ ছাঁদ, যার প্রতিটি ফাটল, খসে পড়া প্লাস্টার আর দৃশ্যমান রড যেন ভবিষ্যতের কোনো ভয়াবহতার পূর্বাভাস হয়ে দাঁড়িয়ে আছে। ছাউনি নির্মাণের পর বহু বছর পেরিয়ে গেছে। সময়ের প্রলেপে আজ তার চেহারাটা ক্লান্ত, বিধ্বস্ত। প্লাস্টার কোথাও খসে পড়েছে, কোথাও আবার রড উঁকি দিয়ে ভয় দেখায়। অথচ এর নিচেই প্রতিদিন মানুষের ভিড়, কোলাহল, জীবন।
স্থানীয়দের আক্ষেপ, অনেকবার পৌরসভা ও প্রশাসনকে জানানো হলেও আজও নেয়া হয়নি কোনো কার্যকর উদ্যোগ। তাদের ভাষায়, “প্রতিদিন এখানে দাঁড়িয়ে গাড়ির জন্য অপেক্ষা করি, ছাঁদের দিকে তাকালেই বুক কেঁপে ওঠে। তবুও যাই কোথায়?
একজন দোকানি বলেন, “আমরা জীবিকার তাগিদে দাঁড়িয়ে থাকি মৃত্যুর ছায়ায়। যদি এখনই কিছু না করা হয়, তাহলে একদিন এই ছাউনি কাউকে নিয়ে চিরতরে নিঃস্তব্ধ করে দেবে।”
আজ আর সময় নেই ‘দায়িত্ব নেওয়ার আশ্বাস’ শুনে বসে থাকার। আজ দরকার তাৎক্ষণিক পদক্ষেপ—একটি প্রাণ হারানোর আগেই। এই ছাউনির প্রতিটি ফাটল যতক্ষণ না মেরামত হচ্ছে, ততক্ষণ যেন আপনাদের ঘুম না আসে। কারণ আমরা আর কোনোদিন চাই না একখণ্ড ছাঁদ হঠাৎ ভেঙে পড়ে একগুচ্ছ স্বপ্ন থামিয়ে দিক। সাবধান হোন, সচেতন হোন, এবং হস্তক্ষেপ করুন দ্রুত মেরামতের জন্য। কারণ আগামীকাল এই ছাউনি হয়তো আর ছাউনি থাকবে না, থাকবে শুধুই ধ্বংসস্তূপ আর কান্না।