Dhaka 5:05 pm, Sunday, 27 July 2025

গোপালগঞ্জের ইউপি সদস্য মাফুজা বেগম এবং তার লাঠিয়াল বাহিনীর বিরুদ্ধে গুরুতর অভিযোগ

  • Reporter Name
  • Update Time : 01:36:39 pm, Saturday, 26 July 2025
  • 64 Time View

মোঃ রাজু, গোপালগঞ্জ

গোপালগঞ্জ সদর উপজেলার মেরি গোপীনাথপুর গ্রামের মাফুজা বেগম (৪৫), যিনি পরপর দুইবার আওয়ামী লীগ সমর্থিত ইউপি সদস্য নির্বাচিত হয়েছেন, তার বিরুদ্ধে একাধিক গুরুতর অভিযোগ উঠেছে। স্বামীর নাম: মফিজ শরীফ।

অভিযোগ ১: জেলগেটে ষড়যন্ত্রমূলক আলাপচারিতা

স্থানীয়দের অভিযোগ, সেনাবাহিনীর করা মামলার এজাহারভুক্ত ৮ নম্বর আসামি ও বর্তমান চেয়ারম্যান সাহেব আলী মোল্লা টুকু কারাগারে থাকাকালে, গত ৯ জুলাই ২০২৫ তারিখে ইউপি সদস্য মাফুজা বেগম জেলগেটে গিয়ে তার সঙ্গে দীর্ঘসময় কথোপকথন করেন। অভিযোগ রয়েছে, সেখানে তারা নতুন করে একটি রাজনৈতিক ষড়যন্ত্রের ছক কষেন, যার প্রমাণ হিসেবে সিসিটিভি ফুটেজ বিশ্লেষণের দাবি করেছেন স্থানীয়রা।এখানে উল্লেখ করার মতো বিষয় যে, গোপালগঞ্জে এনসিপির সমাবেশ করার কয়েকদিন আগে এই সংবেদনশীল আলাপচারিত হয়।

অভিযোগ ২: ভূমি দখল ও হয়রানি চেষ্টা

মাফুজা বেগমের বিরুদ্ধে অভিযোগ, আশ্রয়ণ প্রকল্পের সন্নিকটে থাকা একটি ভূমির মালিক রনি কাজীকে তার নিজস্ব জায়গা থেকে উচ্ছেদ করতে লাঠিয়াল বাহিনী ব্যবহার করেন তিনি। জানা গেছে, উক্ত ভূমি নিয়ে সরকারের সাথে ভুল বোঝাবুঝির অবসান ঘটিয়ে রনি কাজী আদালতের রায়ে নিজ ভূমির দখল ফিরে পান। কিন্তু তারপরও রনি কাজী ও তার আত্মীয়দের হয়রানি করা হয়, এমনকি গোপীনাথপুর তদন্ত কেন্দ্রে তার নামে মিথ্যা অভিযোগ দাখিল করা হয়। একপর্যায়ে,হাবিব শরীফ নামের এক ব্যক্তির মাধ্যমে মামলা দায়ের করে বসবাসের অনুপযোগী করে তোলারও অভিযোগ উঠেছে।

 

অভিযোগ ৩: সেনাবাহিনীর সঙ্গে সংঘর্ষে ইন্ধন

গত ১০/০৮/২০২৪ তারিখে সেনাবাহিনীর সঙ্গে যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে,তার কেন্দ্রবিন্দু ছিল মাফুজা বেগমের ৫ নম্বর ওয়ার্ড। অভিযোগ উঠেছে,সংঘর্ষে অংশগ্রহণকারী লাঠিয়াল বাহিনীর একটা বড় অংশ তার মদদপুষ্ট।তার ওয়ার্ড এর মধ্যে হওয়ায় কোনভাবেই সে দায় এড়াতে পারে না।মহিলা হওয়ার কারণে যা অনেকটাই লোকচক্ষুর আড়ালে থেকে গেছে।সরকারের অনুদান প্রাপ্ত আশ্রয়ন প্রকল্পের কিছু অসাধু ব্যক্তিকে এমন ভাবে মাহফুজা বেগম বুঝিয়েছে যে এই আশ্রয়ন প্রকল্পের ঘর আমাদের মা শেখ হাসিনা দিয়েছেন। যেকোনো মূল্যে তাকে ফিরিয়ে দেশে আনার জন্য যত সংঘর্ষের প্রয়োজন হোক তা করা দরকার এবং সেনাবাহিনীর নিয়মিত দায়িত্ব পালনকালে অতর্কিত হামলা চালায় এবং সেনাবাহিনীর গাড়ি ভাঙচুর করে।

অভিযোগ ৪:

স্থানীয়দের কাছ থেকে জানা গেছে যে, রাজু কাজীর বরাদ্দকৃত ঘর থেকে মাহফুজা বেগম মদতপুষ্ঠ সেলিম সিকদার এবং আরিফুজ্জামান ২০ হাজার টাকা করে চাঁদা দাবি করে। চাঁদা দিতে অসমর্থ হওয়ায় রাজু কাজী কে ঘর থেকে বের করে দেয়া হয় এবং সেই ঘরে বর্তমানে সেলিম সিকদার জোর দখল করে বাস করে। সেলিম সিকদার এবং আরিফুজ্জামান আশ্রয়ন প্রকল্পের অনেকের মিউটেশনকৃত কাগজ এসি ল্যান্ড অফিস থেকে উত্তোলন করে জন প্রতি ৫,১০,২০ হাজার টাকা আদায় করে, টাকা দিতে না পারলে মিউটেশনকৃত কাগজ পাওয়া সম্ভব হয় না। টাকা তোলার দায়িত্বে থাকেন সেলিম সিকদার, আরিফুজ্জামান এবং আরিফুজ্জামান এর স্ত্রী সাজেদা বেগম। সব ধরনের চাঁদার টাকার মোটা একটা অংশ দিতে হয় মাহফুজা বেগমকে। বিদ্যুৎ সরবরাহের লাইন এনে দেওয়ার প্রলোভন দেখিয়ে মিটার প্রতি পর্যায়ক্রমে টাকা উত্তোলন করা হয় যে কাজগুলা সরকারি অফিসের তা তারা নিজেরাই সম্পাদন করছে শুধু টাকা আয়ের নেশায়। সেলিম সিকদার একাধিকবার ধর্ষণসহ অনেক অনৈতিক কর্মকান্ডে লিপ্ত থাকায় গণপিটুনি দেয় এবং জনগণ তাকে গোপীনাথপুর তদন্ত কেন্দ্রে হস্তান্তর করে।

লাঠিয়াল বাহিনীর একাংশের তালিকা:

১.হাবিব শরীফ(৩২)
পিতার নাম: ইব্রাহিম শরীফ
গ্রাম: মেরী গোপীনাথপুর
থানা+জেলা: গোপালগঞ্জ
২. রবিউল শরীফ(৩৫)
পিতার নাম: ইব্রাহিম শরীফ
গ্রাম: মেরী গোপীনাথপুর
থানা+জেলা: গোপালগঞ্জ।
৩. দিদার শরীফ(৪০)
পিতার নাম: ইব্রাহিম শরীফ
গ্রাম: মেরী গোপীনাথপুর
থানা+জেলা: গোপালগঞ্জ।
৪. জাকির শরীফ(৪০)
পিতার নাম: ইব্রাহিম শরীফ
গ্রাম: মেরী গোপীনাথপুর
থানা+জেলা: গোপালগঞ্জ।
৫. ফয়সাল শরীফ(২৮) ৬
পিতার নাম: ইব্রাহিম শরীফ
গ্রাম: মেরী গোপীনাথপুর
থানা+জেলা: গোপালগঞ্জ
৬.সেলিম শিকদার
পিতার নাম: কাসেম শিকদার, ঠিকানা: গোপীনাথপুর আশ্রয়ন প্রকল্প-২

৭. আরিফুজ্জামান
পিতার নাম: অজ্ঞাত
ঠিকানা: আশ্রয়ণ প্রকল্প-২
অজ্ঞাত আরো অনেকেই।

লাঠিয়াল বাহিনীর প্রধান মাহফুজা বেগম আওয়ামী লীগের লোক হওয়া সত্ত্বেও গ্রামে দাপিয়ে বেড়াচ্ছে। তার লাঠিয়াল বাহিনীর মধ্যে একমাত্র ৭ নম্বর সিরিয়ালে থাকা ব্যক্তি আরিফুজ্জামানকে প্রশাসন গ্রেপ্তার করতে সক্ষম হয়েছে।

Tag :
সম্পাদক ও প্রকাশক : আবুল হাসান

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

জনপ্রিয়

‎৩১ দফা বাস্তবায়নে জয়পুহাটে বিএনপির নেতা এম এ গফুর মন্ডলের গণসংযোগ ও পথসভা 

গোপালগঞ্জের ইউপি সদস্য মাফুজা বেগম এবং তার লাঠিয়াল বাহিনীর বিরুদ্ধে গুরুতর অভিযোগ

Update Time : 01:36:39 pm, Saturday, 26 July 2025

মোঃ রাজু, গোপালগঞ্জ

গোপালগঞ্জ সদর উপজেলার মেরি গোপীনাথপুর গ্রামের মাফুজা বেগম (৪৫), যিনি পরপর দুইবার আওয়ামী লীগ সমর্থিত ইউপি সদস্য নির্বাচিত হয়েছেন, তার বিরুদ্ধে একাধিক গুরুতর অভিযোগ উঠেছে। স্বামীর নাম: মফিজ শরীফ।

অভিযোগ ১: জেলগেটে ষড়যন্ত্রমূলক আলাপচারিতা

স্থানীয়দের অভিযোগ, সেনাবাহিনীর করা মামলার এজাহারভুক্ত ৮ নম্বর আসামি ও বর্তমান চেয়ারম্যান সাহেব আলী মোল্লা টুকু কারাগারে থাকাকালে, গত ৯ জুলাই ২০২৫ তারিখে ইউপি সদস্য মাফুজা বেগম জেলগেটে গিয়ে তার সঙ্গে দীর্ঘসময় কথোপকথন করেন। অভিযোগ রয়েছে, সেখানে তারা নতুন করে একটি রাজনৈতিক ষড়যন্ত্রের ছক কষেন, যার প্রমাণ হিসেবে সিসিটিভি ফুটেজ বিশ্লেষণের দাবি করেছেন স্থানীয়রা।এখানে উল্লেখ করার মতো বিষয় যে, গোপালগঞ্জে এনসিপির সমাবেশ করার কয়েকদিন আগে এই সংবেদনশীল আলাপচারিত হয়।

অভিযোগ ২: ভূমি দখল ও হয়রানি চেষ্টা

মাফুজা বেগমের বিরুদ্ধে অভিযোগ, আশ্রয়ণ প্রকল্পের সন্নিকটে থাকা একটি ভূমির মালিক রনি কাজীকে তার নিজস্ব জায়গা থেকে উচ্ছেদ করতে লাঠিয়াল বাহিনী ব্যবহার করেন তিনি। জানা গেছে, উক্ত ভূমি নিয়ে সরকারের সাথে ভুল বোঝাবুঝির অবসান ঘটিয়ে রনি কাজী আদালতের রায়ে নিজ ভূমির দখল ফিরে পান। কিন্তু তারপরও রনি কাজী ও তার আত্মীয়দের হয়রানি করা হয়, এমনকি গোপীনাথপুর তদন্ত কেন্দ্রে তার নামে মিথ্যা অভিযোগ দাখিল করা হয়। একপর্যায়ে,হাবিব শরীফ নামের এক ব্যক্তির মাধ্যমে মামলা দায়ের করে বসবাসের অনুপযোগী করে তোলারও অভিযোগ উঠেছে।

 

অভিযোগ ৩: সেনাবাহিনীর সঙ্গে সংঘর্ষে ইন্ধন

গত ১০/০৮/২০২৪ তারিখে সেনাবাহিনীর সঙ্গে যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে,তার কেন্দ্রবিন্দু ছিল মাফুজা বেগমের ৫ নম্বর ওয়ার্ড। অভিযোগ উঠেছে,সংঘর্ষে অংশগ্রহণকারী লাঠিয়াল বাহিনীর একটা বড় অংশ তার মদদপুষ্ট।তার ওয়ার্ড এর মধ্যে হওয়ায় কোনভাবেই সে দায় এড়াতে পারে না।মহিলা হওয়ার কারণে যা অনেকটাই লোকচক্ষুর আড়ালে থেকে গেছে।সরকারের অনুদান প্রাপ্ত আশ্রয়ন প্রকল্পের কিছু অসাধু ব্যক্তিকে এমন ভাবে মাহফুজা বেগম বুঝিয়েছে যে এই আশ্রয়ন প্রকল্পের ঘর আমাদের মা শেখ হাসিনা দিয়েছেন। যেকোনো মূল্যে তাকে ফিরিয়ে দেশে আনার জন্য যত সংঘর্ষের প্রয়োজন হোক তা করা দরকার এবং সেনাবাহিনীর নিয়মিত দায়িত্ব পালনকালে অতর্কিত হামলা চালায় এবং সেনাবাহিনীর গাড়ি ভাঙচুর করে।

অভিযোগ ৪:

স্থানীয়দের কাছ থেকে জানা গেছে যে, রাজু কাজীর বরাদ্দকৃত ঘর থেকে মাহফুজা বেগম মদতপুষ্ঠ সেলিম সিকদার এবং আরিফুজ্জামান ২০ হাজার টাকা করে চাঁদা দাবি করে। চাঁদা দিতে অসমর্থ হওয়ায় রাজু কাজী কে ঘর থেকে বের করে দেয়া হয় এবং সেই ঘরে বর্তমানে সেলিম সিকদার জোর দখল করে বাস করে। সেলিম সিকদার এবং আরিফুজ্জামান আশ্রয়ন প্রকল্পের অনেকের মিউটেশনকৃত কাগজ এসি ল্যান্ড অফিস থেকে উত্তোলন করে জন প্রতি ৫,১০,২০ হাজার টাকা আদায় করে, টাকা দিতে না পারলে মিউটেশনকৃত কাগজ পাওয়া সম্ভব হয় না। টাকা তোলার দায়িত্বে থাকেন সেলিম সিকদার, আরিফুজ্জামান এবং আরিফুজ্জামান এর স্ত্রী সাজেদা বেগম। সব ধরনের চাঁদার টাকার মোটা একটা অংশ দিতে হয় মাহফুজা বেগমকে। বিদ্যুৎ সরবরাহের লাইন এনে দেওয়ার প্রলোভন দেখিয়ে মিটার প্রতি পর্যায়ক্রমে টাকা উত্তোলন করা হয় যে কাজগুলা সরকারি অফিসের তা তারা নিজেরাই সম্পাদন করছে শুধু টাকা আয়ের নেশায়। সেলিম সিকদার একাধিকবার ধর্ষণসহ অনেক অনৈতিক কর্মকান্ডে লিপ্ত থাকায় গণপিটুনি দেয় এবং জনগণ তাকে গোপীনাথপুর তদন্ত কেন্দ্রে হস্তান্তর করে।

লাঠিয়াল বাহিনীর একাংশের তালিকা:

১.হাবিব শরীফ(৩২)
পিতার নাম: ইব্রাহিম শরীফ
গ্রাম: মেরী গোপীনাথপুর
থানা+জেলা: গোপালগঞ্জ
২. রবিউল শরীফ(৩৫)
পিতার নাম: ইব্রাহিম শরীফ
গ্রাম: মেরী গোপীনাথপুর
থানা+জেলা: গোপালগঞ্জ।
৩. দিদার শরীফ(৪০)
পিতার নাম: ইব্রাহিম শরীফ
গ্রাম: মেরী গোপীনাথপুর
থানা+জেলা: গোপালগঞ্জ।
৪. জাকির শরীফ(৪০)
পিতার নাম: ইব্রাহিম শরীফ
গ্রাম: মেরী গোপীনাথপুর
থানা+জেলা: গোপালগঞ্জ।
৫. ফয়সাল শরীফ(২৮) ৬
পিতার নাম: ইব্রাহিম শরীফ
গ্রাম: মেরী গোপীনাথপুর
থানা+জেলা: গোপালগঞ্জ
৬.সেলিম শিকদার
পিতার নাম: কাসেম শিকদার, ঠিকানা: গোপীনাথপুর আশ্রয়ন প্রকল্প-২

৭. আরিফুজ্জামান
পিতার নাম: অজ্ঞাত
ঠিকানা: আশ্রয়ণ প্রকল্প-২
অজ্ঞাত আরো অনেকেই।

লাঠিয়াল বাহিনীর প্রধান মাহফুজা বেগম আওয়ামী লীগের লোক হওয়া সত্ত্বেও গ্রামে দাপিয়ে বেড়াচ্ছে। তার লাঠিয়াল বাহিনীর মধ্যে একমাত্র ৭ নম্বর সিরিয়ালে থাকা ব্যক্তি আরিফুজ্জামানকে প্রশাসন গ্রেপ্তার করতে সক্ষম হয়েছে।