Dhaka 5:08 pm, Sunday, 27 July 2025

নির্বাচন কমিশন নিয়োগে অবস্থান বদলে বিএনপি, অন্য কমিশনে অনড়

  • Reporter Name
  • Update Time : 01:01:30 pm, Wednesday, 23 July 2025
  • 84 Time View

মোঃ শাহজাহান বাশার, সিনিয়র স্টাফ রিপোর্টার

বহুদিনের বিরোধিতা ও আপত্তির পর নির্বাচন কমিশন গঠন নিয়ে নিজেদের আগের অবস্থান থেকে সরে এসেছে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি)। দলটি এখন নির্বাচন কমিশন গঠন আইনকে সংবিধানে অন্তর্ভুক্ত করার পক্ষে মত দিয়েছে, যদিও অন্যান্য সংবিধিবদ্ধ ও সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠানের নিয়োগ পদ্ধতি নিয়ে এখনও অনড় অবস্থানে রয়েছে।

জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের উদ্যোগে চলমান সংলাপের ১৮তম দিনে, বুধবার অনুষ্ঠিত দ্বিতীয় দফার আলোচনায় বিএনপির পক্ষ থেকে এ অবস্থান উপস্থাপন করা হয়। আলোচনার বিষয়বস্তু ছিল নির্বাচন কমিশন, সরকারি কর্ম কমিশন (পিএসসি), মহা হিসাব নিরীক্ষক ও নিয়ন্ত্রক (সিএজি), দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক), এবং ন্যায়পাল নিয়োগ পদ্ধতি।

প্রসঙ্গত, এতদিন বিএনপি সংবিধানে অন্তর্ভুক্তির বিপক্ষে থেকে শুধুমাত্র আইনের মাধ্যমে নিয়োগ প্রক্রিয়ার পক্ষে মত দিয়ে আসছিল। কিন্তু সর্বশেষ আলোচনায় তারা নির্বাচন কমিশনের ক্ষেত্রে আইন নয়, বরং সরাসরি সংবিধানে অন্তর্ভুক্তির ব্যাপারে সম্মত হয়, যা এক প্রকার অবস্থান পরিবর্তন হিসেবেই বিবেচিত হচ্ছে।

বিএনপি নির্বাচন কমিশন গঠনের প্রক্রিয়ায়ও সংস্কারমূলক প্রস্তাব দিয়েছে। বর্তমানে প্রচলিত ৭ সদস্যবিশিষ্ট সিলেকশন কমিটির পরিবর্তে ৫ সদস্যের কমিটি গঠনের সুপারিশ করেছে দলটি। প্রস্তাবিত কমিটিতে থাকবেন:সংসদ নেতা (প্রধানমন্ত্রী),স্পিকার,প্রধান বিরোধী দলের নেতা,বিরোধী দল থেকে মনোনীত ডেপুটি স্পিকার,এবং প্রধান বিচারপতির একজন প্রতিনিধি।

এ প্রস্তাবের মাধ্যমে দলটি চায় যেন সিলেকশন কমিটিতে রাজনৈতিক ভারসাম্য ও বিচারিক নিরপেক্ষতা বজায় থাকে। তবে সরকারি কর্ম কমিশন, দুদক, মহা হিসাব নিরীক্ষক ও ন্যায়পাল নিয়োগের ক্ষেত্রে কোনো ধরনের ছাড় দিতে রাজি হয়নি বিএনপি। এসব নিয়োগ সংক্রান্ত বিধানকে এখনই সংবিধানে অন্তর্ভুক্ত করার বিপক্ষে তারা। বিএনপির ভাষ্য অনুযায়ী, এগুলো সংবিধানে না উঠে স্বতন্ত্র আইনের মাধ্যমে নিয়ন্ত্রিত হওয়াই যুক্তিযুক্ত।

জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের এই সংলাপে বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের প্রতিনিধিরা অংশ নিচ্ছেন। উদ্দেশ্য, জাতীয় গুরুত্বপূর্ণ প্রতিষ্ঠানগুলোর নিয়োগ প্রক্রিয়ায় স্বচ্ছতা, জবাবদিহিতা ও রাজনৈতিক ঐকমত্য নিশ্চিত করা।

বিএনপির এ অবস্থান পরিবর্তন রাজনৈতিক অঙ্গনে আলোচনার জন্ম দিয়েছে। বিশেষ করে, নির্বাচন কমিশন নিয়ে সংবিধানে অন্তর্ভুক্তির পক্ষে মত দেওয়া অনেকের কাছে ইতিবাচক অগ্রগতি হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে, যা দীর্ঘদিনের রাজনৈতিক জটিলতায় কিছুটা সমঝোতার আভাসও বহন করছে।

Tag :
সম্পাদক ও প্রকাশক : আবুল হাসান

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

জনপ্রিয়

‎৩১ দফা বাস্তবায়নে জয়পুহাটে বিএনপির নেতা এম এ গফুর মন্ডলের গণসংযোগ ও পথসভা 

নির্বাচন কমিশন নিয়োগে অবস্থান বদলে বিএনপি, অন্য কমিশনে অনড়

Update Time : 01:01:30 pm, Wednesday, 23 July 2025

মোঃ শাহজাহান বাশার, সিনিয়র স্টাফ রিপোর্টার

বহুদিনের বিরোধিতা ও আপত্তির পর নির্বাচন কমিশন গঠন নিয়ে নিজেদের আগের অবস্থান থেকে সরে এসেছে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি)। দলটি এখন নির্বাচন কমিশন গঠন আইনকে সংবিধানে অন্তর্ভুক্ত করার পক্ষে মত দিয়েছে, যদিও অন্যান্য সংবিধিবদ্ধ ও সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠানের নিয়োগ পদ্ধতি নিয়ে এখনও অনড় অবস্থানে রয়েছে।

জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের উদ্যোগে চলমান সংলাপের ১৮তম দিনে, বুধবার অনুষ্ঠিত দ্বিতীয় দফার আলোচনায় বিএনপির পক্ষ থেকে এ অবস্থান উপস্থাপন করা হয়। আলোচনার বিষয়বস্তু ছিল নির্বাচন কমিশন, সরকারি কর্ম কমিশন (পিএসসি), মহা হিসাব নিরীক্ষক ও নিয়ন্ত্রক (সিএজি), দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক), এবং ন্যায়পাল নিয়োগ পদ্ধতি।

প্রসঙ্গত, এতদিন বিএনপি সংবিধানে অন্তর্ভুক্তির বিপক্ষে থেকে শুধুমাত্র আইনের মাধ্যমে নিয়োগ প্রক্রিয়ার পক্ষে মত দিয়ে আসছিল। কিন্তু সর্বশেষ আলোচনায় তারা নির্বাচন কমিশনের ক্ষেত্রে আইন নয়, বরং সরাসরি সংবিধানে অন্তর্ভুক্তির ব্যাপারে সম্মত হয়, যা এক প্রকার অবস্থান পরিবর্তন হিসেবেই বিবেচিত হচ্ছে।

বিএনপি নির্বাচন কমিশন গঠনের প্রক্রিয়ায়ও সংস্কারমূলক প্রস্তাব দিয়েছে। বর্তমানে প্রচলিত ৭ সদস্যবিশিষ্ট সিলেকশন কমিটির পরিবর্তে ৫ সদস্যের কমিটি গঠনের সুপারিশ করেছে দলটি। প্রস্তাবিত কমিটিতে থাকবেন:সংসদ নেতা (প্রধানমন্ত্রী),স্পিকার,প্রধান বিরোধী দলের নেতা,বিরোধী দল থেকে মনোনীত ডেপুটি স্পিকার,এবং প্রধান বিচারপতির একজন প্রতিনিধি।

এ প্রস্তাবের মাধ্যমে দলটি চায় যেন সিলেকশন কমিটিতে রাজনৈতিক ভারসাম্য ও বিচারিক নিরপেক্ষতা বজায় থাকে। তবে সরকারি কর্ম কমিশন, দুদক, মহা হিসাব নিরীক্ষক ও ন্যায়পাল নিয়োগের ক্ষেত্রে কোনো ধরনের ছাড় দিতে রাজি হয়নি বিএনপি। এসব নিয়োগ সংক্রান্ত বিধানকে এখনই সংবিধানে অন্তর্ভুক্ত করার বিপক্ষে তারা। বিএনপির ভাষ্য অনুযায়ী, এগুলো সংবিধানে না উঠে স্বতন্ত্র আইনের মাধ্যমে নিয়ন্ত্রিত হওয়াই যুক্তিযুক্ত।

জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের এই সংলাপে বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের প্রতিনিধিরা অংশ নিচ্ছেন। উদ্দেশ্য, জাতীয় গুরুত্বপূর্ণ প্রতিষ্ঠানগুলোর নিয়োগ প্রক্রিয়ায় স্বচ্ছতা, জবাবদিহিতা ও রাজনৈতিক ঐকমত্য নিশ্চিত করা।

বিএনপির এ অবস্থান পরিবর্তন রাজনৈতিক অঙ্গনে আলোচনার জন্ম দিয়েছে। বিশেষ করে, নির্বাচন কমিশন নিয়ে সংবিধানে অন্তর্ভুক্তির পক্ষে মত দেওয়া অনেকের কাছে ইতিবাচক অগ্রগতি হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে, যা দীর্ঘদিনের রাজনৈতিক জটিলতায় কিছুটা সমঝোতার আভাসও বহন করছে।