Dhaka 5:13 pm, Sunday, 27 July 2025

ডিসির বাংলা থেকে অবমুক্ত ঠাকুরগাঁও সীমান্তে পাচারকালে ছয়টি টিয়া পাখি উদ্ধার

  • Reporter Name
  • Update Time : 01:20:03 pm, Wednesday, 23 July 2025
  • 83 Time View
মোঃ শফিকুল ইসলাম দুলাল, ঠাকুরগাঁও প্রতিনিধি                                     
ঠাকুরগাঁওয়ের বালিয়াডাঙ্গী সীমান্ত দিয়ে ভারতে পাচারের সময় ছয়টি টিয়া পাখি উদ্ধার করেছে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি)। একইসঙ্গে বন্যপ্রাণী শিকার ও পাচারের অভিযোগে তিনজন বাংলাদেশি নাগরিককে আটক করা হয়েছে। বুধবার উদ্ধারকৃত টিয়া পাখিগুলোকে অবমুক্ত করা হয়।
বিজিবি জানায়, সোমবার ভোরে ঠাকুরগাঁও জেলার বালিয়াডাঙ্গী উপজেলার আমজানখোর ইউনিয়নের কোর্টপাড়া সীমান্ত এলাকায় ৫০/ডি কোম্পানির কোর্টপাড়া বিওপির একটি টহল দল গোপন সংবাদের ভিত্তিতে অভিযান চালায়। তারা জানতে পারেন, সীমান্ত পিলার ৩৮৫ এর নিকট তিনজন ব্যক্তি ভারতের দিকে যাচ্ছেন।
টহলরত বিজিবি সদস্যরা তাদের চ্যালেঞ্জ করলে তারা পালানোর চেষ্টা করে। পরে ধাওয়া করে তিনজনকে আটক করা হয়। আটককৃতরা হলেন ডারানুবাড়ী (পুকুরপাড়া) গ্রামের মো. মিঠুন (২২), দক্ষিণ পরিয়া গ্রামের মো. আনোয়ার হোসেন (৪২) এবং কোর্টপাড়া গ্রামের বিষ্ণু পাল (৪০)।
বিজিবির ভাষ্য অনুযায়ী, আটক ব্যক্তিরা পাসপোর্ট বা কোনো বৈধ ভ্রমণ নথি ছাড়াই ভারতের অভ্যন্তরে প্রবেশ করে অবৈধভাবে বন্যপ্রাণী শিকার করে দেশে ফেরার চেষ্টা করছিলেন। স্থানীয় দুইজন সাক্ষীর উপস্থিতিতে তাদের দেহ তল্লাশি করে ছয়টি লাল-সবুজ ব্যাগে রাখা টিয়া পাখি উদ্ধার করা হয়। বন্যপ্রাণী (সংরক্ষণ ও নিরাপত্তা) আইন, ২০১২-এর ৩৮ ধারা এবং বাংলাদেশ পাসপোর্ট আদেশ ১৯৭৩-এর ১১(১)(ক) ধারা অনুযায়ী তাদের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করা হয়েছে।
পরে জেলা প্রশাসকের নির্দেশে বুধবার ঠাকুরগাঁও জেলা প্রশাসকের বাংলো প্রাঙ্গণে এক অনাড়ম্বর আয়োজনে ছয়টি টিয়া পাখিকে মুক্ত আকাশে অবমুক্ত করা হয়। জেলা প্রশাসক ইশরাত ফারজানা নিজ হাতে পাখিগুলো অবমুক্ত করেন। এ সময় উপস্থিত ছিলেন সহকারী বন সংরক্ষক নুরুন্নাহার, বন কর্মকর্তা শরিফুল ইসলাম ও সাপ ও বন্যপ্রাণী উদ্ধারকর্মী আবু বকর সিদ্দিক আসিফ।
পাখি অবমুক্তকরণ শেষে জেলা প্রশাসক বলেন, “প্রকৃতির ভারসাম্য রক্ষায় বন্যপ্রাণীর গুরুত্ব অপরিসীম। এসব টিয়া পাখিকে অবমুক্ত করতে পেরে আমরা আনন্দিত। মানুষ যেন বন্যপ্রাণীর প্রতি আরও সচেতন হয় এবং তাদের স্বাধীনভাবে বেঁচে থাকার অধিকার নিশ্চিত করে, সেটাই আমাদের প্রত্যাশা।” তিনি আরও জানান, বন্যপ্রাণী আটকে রাখা আইনত দন্ডনীয় অপরাধ এবং এ বিষয়ে প্রশাসন ও বন বিভাগ সর্বদা সতর্ক রয়েছে।
Tag :
সম্পাদক ও প্রকাশক : আবুল হাসান

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

জনপ্রিয়

‎৩১ দফা বাস্তবায়নে জয়পুহাটে বিএনপির নেতা এম এ গফুর মন্ডলের গণসংযোগ ও পথসভা 

ডিসির বাংলা থেকে অবমুক্ত ঠাকুরগাঁও সীমান্তে পাচারকালে ছয়টি টিয়া পাখি উদ্ধার

Update Time : 01:20:03 pm, Wednesday, 23 July 2025
মোঃ শফিকুল ইসলাম দুলাল, ঠাকুরগাঁও প্রতিনিধি                                     
ঠাকুরগাঁওয়ের বালিয়াডাঙ্গী সীমান্ত দিয়ে ভারতে পাচারের সময় ছয়টি টিয়া পাখি উদ্ধার করেছে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি)। একইসঙ্গে বন্যপ্রাণী শিকার ও পাচারের অভিযোগে তিনজন বাংলাদেশি নাগরিককে আটক করা হয়েছে। বুধবার উদ্ধারকৃত টিয়া পাখিগুলোকে অবমুক্ত করা হয়।
বিজিবি জানায়, সোমবার ভোরে ঠাকুরগাঁও জেলার বালিয়াডাঙ্গী উপজেলার আমজানখোর ইউনিয়নের কোর্টপাড়া সীমান্ত এলাকায় ৫০/ডি কোম্পানির কোর্টপাড়া বিওপির একটি টহল দল গোপন সংবাদের ভিত্তিতে অভিযান চালায়। তারা জানতে পারেন, সীমান্ত পিলার ৩৮৫ এর নিকট তিনজন ব্যক্তি ভারতের দিকে যাচ্ছেন।
টহলরত বিজিবি সদস্যরা তাদের চ্যালেঞ্জ করলে তারা পালানোর চেষ্টা করে। পরে ধাওয়া করে তিনজনকে আটক করা হয়। আটককৃতরা হলেন ডারানুবাড়ী (পুকুরপাড়া) গ্রামের মো. মিঠুন (২২), দক্ষিণ পরিয়া গ্রামের মো. আনোয়ার হোসেন (৪২) এবং কোর্টপাড়া গ্রামের বিষ্ণু পাল (৪০)।
বিজিবির ভাষ্য অনুযায়ী, আটক ব্যক্তিরা পাসপোর্ট বা কোনো বৈধ ভ্রমণ নথি ছাড়াই ভারতের অভ্যন্তরে প্রবেশ করে অবৈধভাবে বন্যপ্রাণী শিকার করে দেশে ফেরার চেষ্টা করছিলেন। স্থানীয় দুইজন সাক্ষীর উপস্থিতিতে তাদের দেহ তল্লাশি করে ছয়টি লাল-সবুজ ব্যাগে রাখা টিয়া পাখি উদ্ধার করা হয়। বন্যপ্রাণী (সংরক্ষণ ও নিরাপত্তা) আইন, ২০১২-এর ৩৮ ধারা এবং বাংলাদেশ পাসপোর্ট আদেশ ১৯৭৩-এর ১১(১)(ক) ধারা অনুযায়ী তাদের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করা হয়েছে।
পরে জেলা প্রশাসকের নির্দেশে বুধবার ঠাকুরগাঁও জেলা প্রশাসকের বাংলো প্রাঙ্গণে এক অনাড়ম্বর আয়োজনে ছয়টি টিয়া পাখিকে মুক্ত আকাশে অবমুক্ত করা হয়। জেলা প্রশাসক ইশরাত ফারজানা নিজ হাতে পাখিগুলো অবমুক্ত করেন। এ সময় উপস্থিত ছিলেন সহকারী বন সংরক্ষক নুরুন্নাহার, বন কর্মকর্তা শরিফুল ইসলাম ও সাপ ও বন্যপ্রাণী উদ্ধারকর্মী আবু বকর সিদ্দিক আসিফ।
পাখি অবমুক্তকরণ শেষে জেলা প্রশাসক বলেন, “প্রকৃতির ভারসাম্য রক্ষায় বন্যপ্রাণীর গুরুত্ব অপরিসীম। এসব টিয়া পাখিকে অবমুক্ত করতে পেরে আমরা আনন্দিত। মানুষ যেন বন্যপ্রাণীর প্রতি আরও সচেতন হয় এবং তাদের স্বাধীনভাবে বেঁচে থাকার অধিকার নিশ্চিত করে, সেটাই আমাদের প্রত্যাশা।” তিনি আরও জানান, বন্যপ্রাণী আটকে রাখা আইনত দন্ডনীয় অপরাধ এবং এ বিষয়ে প্রশাসন ও বন বিভাগ সর্বদা সতর্ক রয়েছে।