Dhaka 5:12 pm, Sunday, 27 July 2025

ক্যাপ্টেন তৌকিরের মৃত্যুতে এলাকায় শোকের ছায়া, পিতৃ ভুমিতে দাফনের দাবি

  • Reporter Name
  • Update Time : 01:40:54 pm, Tuesday, 22 July 2025
  • 48 Time View
মোঃ কাওসার আলি, শিবগঞ্জ, চাঁপাইনবাবগঞ্জ   

আমরা শোকহত, মর্মাহত। আমাদের এলাকার গর্ব ছিল, সবার ভালোবাসার পাত্র পাইলট তৌকির ইসলাম সাগর। আমরা চাই এই গ্রামেই জন্মগ্রহণ করা আমাদের এই কৃতিসন্তানের জানাযা ও দাফন এই চককীর্তি ইউনিয়নের কৃষ্ণচন্দ্রপুর গ্রামেই হোক। আমরা শেষবারের মত তার মুখখানা দেখতে পাব এবং প্রাণভরে দোয়া করতে পারব। কথাগুলো বললেন চাঁপাইনবাবগঞ্জের শিবগঞ্জ উপজেলার চককীর্তি ইউনিয়নের কৃষ্ণচন্দ্রপুর গ্রামের বিভিন্ন পেশার শোকাহত মানুষ। সোমবার সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে সরজমিনে পাইলট তৌকিরের জন্মস্থান কৃষ্ণচন্দ্রপুর গ্রামের আবুল কাশেম বলেন, তৌকির ইসলাম সাগর ও তার পরিবার বহু পূর্ব থেকেই দানশীল ও পরপকারী। পাইলট তৌকির ইসলাম সাগরও অত্যন্ত ভাল মানুষ ছিলেন। তিনি এখানে জন্মগ্রহণ করলেও তা বেড়ে উঠা রাজশাহী শহরে। তবে তিনি ভূলে যাননি এলাকার সাধারণ মানুষের কথা। যখনই এলাকার কোন রোগী রাজশাহীতে কোন হাসপাতালে বা ক্লিনিকে চিকিৎসার জন্য যেতেন তখনি তিনি ও তার পরিবারের সদস্যরা খবর পাওয়া মাত্রই ছুটে আসতেন, খোঁজখবর নিতেন এবং আর্থিক সহযোগিতা করতেন।
এলাকার শিশু শিক্ষার্থী সাদ আহমেদ কান্নাজরিত কণ্ঠে বলেন, সাগর কাক্কু খুব ভালো ছিলেন। বাড়ি আসলেই আমাদের লেখাপড়ার খোঁজখবর নিতেন এবং আদর করতেন। এমনকি খাতা কলম কেনার টাকা দিতেন। যদিও কাক্কুকে এক নজর দেখতে পেতাম এবং তার জানাযা ও দাফন এখানে হলে খুব ভালো হত। আমি দোয়া করি তিনি যেন জান্নাতবাসী হন। এদিকে প্রতিবেশী আলাউদ্দিন, আবদুল লতিফ ও আলহাজ শান্তিজুল বলেন, সাগরের পরিবার একটি ঐতিহ্যবাহী পরিবার। তারা এখানে না থাকলেও সার্বক্ষণিক এলাকার খোঁজখবর নিতেন। তিনি যথেষ্ঠ ধর্ম পরায়ন ছিলেন। তার পিতা তোহরুল ইসলাম ও মাতা সোলেহা বেগম মসজিদের নামে জমিদান ও মসজিদ নির্মাণ করে দিয়েছেন। আমরা চাই, সাগরের মৃতদেহ আমাদের এলাকায় দাফন করতে পরিবার ও উর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষের নিকট অনুরোধ জানায়। তারা আরও বলেন, ওই পরিবারে ভিটাবাড়ি ও জমিজমা থাকলেও পৈত্রিক বাড়িতে কেউ বসবাস করেন না। তারা দীর্ঘদিন ধরে রাজশাহী ও ঢাকায় বসবাস করে আসছেন। উল্লেখ্য, ঢাকার উত্তরায় বাংলাদেশ বিমানবাহিনীর একটি প্রশিক্ষণ বিমান বিধ্বস্ত হয়ে পাইলট তৌকির ইসলাম সাগর নিহত হয়েছেন। সোমবার দুপুরে উত্তরার দিয়াবাড়িতে মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজের হায়দার আলী ভবনে এফ-৭ বিজেআই প্রশিক্ষণ বিমানটি বিধ্বস্ত হয়। দুর্ঘটনায় বহু শিক্ষার্থী নিহত ও সাধারণ মানুষ আহত হন এবং প্রাণ হারান পাইলট তৌকির ইসলামও।
Tag :
সম্পাদক ও প্রকাশক : আবুল হাসান

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

জনপ্রিয়

‎৩১ দফা বাস্তবায়নে জয়পুহাটে বিএনপির নেতা এম এ গফুর মন্ডলের গণসংযোগ ও পথসভা 

ক্যাপ্টেন তৌকিরের মৃত্যুতে এলাকায় শোকের ছায়া, পিতৃ ভুমিতে দাফনের দাবি

Update Time : 01:40:54 pm, Tuesday, 22 July 2025
মোঃ কাওসার আলি, শিবগঞ্জ, চাঁপাইনবাবগঞ্জ   

আমরা শোকহত, মর্মাহত। আমাদের এলাকার গর্ব ছিল, সবার ভালোবাসার পাত্র পাইলট তৌকির ইসলাম সাগর। আমরা চাই এই গ্রামেই জন্মগ্রহণ করা আমাদের এই কৃতিসন্তানের জানাযা ও দাফন এই চককীর্তি ইউনিয়নের কৃষ্ণচন্দ্রপুর গ্রামেই হোক। আমরা শেষবারের মত তার মুখখানা দেখতে পাব এবং প্রাণভরে দোয়া করতে পারব। কথাগুলো বললেন চাঁপাইনবাবগঞ্জের শিবগঞ্জ উপজেলার চককীর্তি ইউনিয়নের কৃষ্ণচন্দ্রপুর গ্রামের বিভিন্ন পেশার শোকাহত মানুষ। সোমবার সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে সরজমিনে পাইলট তৌকিরের জন্মস্থান কৃষ্ণচন্দ্রপুর গ্রামের আবুল কাশেম বলেন, তৌকির ইসলাম সাগর ও তার পরিবার বহু পূর্ব থেকেই দানশীল ও পরপকারী। পাইলট তৌকির ইসলাম সাগরও অত্যন্ত ভাল মানুষ ছিলেন। তিনি এখানে জন্মগ্রহণ করলেও তা বেড়ে উঠা রাজশাহী শহরে। তবে তিনি ভূলে যাননি এলাকার সাধারণ মানুষের কথা। যখনই এলাকার কোন রোগী রাজশাহীতে কোন হাসপাতালে বা ক্লিনিকে চিকিৎসার জন্য যেতেন তখনি তিনি ও তার পরিবারের সদস্যরা খবর পাওয়া মাত্রই ছুটে আসতেন, খোঁজখবর নিতেন এবং আর্থিক সহযোগিতা করতেন।
এলাকার শিশু শিক্ষার্থী সাদ আহমেদ কান্নাজরিত কণ্ঠে বলেন, সাগর কাক্কু খুব ভালো ছিলেন। বাড়ি আসলেই আমাদের লেখাপড়ার খোঁজখবর নিতেন এবং আদর করতেন। এমনকি খাতা কলম কেনার টাকা দিতেন। যদিও কাক্কুকে এক নজর দেখতে পেতাম এবং তার জানাযা ও দাফন এখানে হলে খুব ভালো হত। আমি দোয়া করি তিনি যেন জান্নাতবাসী হন। এদিকে প্রতিবেশী আলাউদ্দিন, আবদুল লতিফ ও আলহাজ শান্তিজুল বলেন, সাগরের পরিবার একটি ঐতিহ্যবাহী পরিবার। তারা এখানে না থাকলেও সার্বক্ষণিক এলাকার খোঁজখবর নিতেন। তিনি যথেষ্ঠ ধর্ম পরায়ন ছিলেন। তার পিতা তোহরুল ইসলাম ও মাতা সোলেহা বেগম মসজিদের নামে জমিদান ও মসজিদ নির্মাণ করে দিয়েছেন। আমরা চাই, সাগরের মৃতদেহ আমাদের এলাকায় দাফন করতে পরিবার ও উর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষের নিকট অনুরোধ জানায়। তারা আরও বলেন, ওই পরিবারে ভিটাবাড়ি ও জমিজমা থাকলেও পৈত্রিক বাড়িতে কেউ বসবাস করেন না। তারা দীর্ঘদিন ধরে রাজশাহী ও ঢাকায় বসবাস করে আসছেন। উল্লেখ্য, ঢাকার উত্তরায় বাংলাদেশ বিমানবাহিনীর একটি প্রশিক্ষণ বিমান বিধ্বস্ত হয়ে পাইলট তৌকির ইসলাম সাগর নিহত হয়েছেন। সোমবার দুপুরে উত্তরার দিয়াবাড়িতে মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজের হায়দার আলী ভবনে এফ-৭ বিজেআই প্রশিক্ষণ বিমানটি বিধ্বস্ত হয়। দুর্ঘটনায় বহু শিক্ষার্থী নিহত ও সাধারণ মানুষ আহত হন এবং প্রাণ হারান পাইলট তৌকির ইসলামও।