
মোঃ শহিদুল ইসলাম, ভূঞাপুর প্রতিনিধি
টাঙ্গাইলের ঘাটাইল উপজেলার ধলাপাড়া ইউনিয়নের মোতাজুড়ি পোড়াবাসা খানমোড় গ্রামে ঘটেছে এক অভাবনীয় ও বিরল ঘটনা। জন্মের পর থেকে দীর্ঘ ১৭ বছর মেয়ের পরিচয়ে বড় হওয়া রুমি আক্তার এখন পরিচিত ‘রাফি’ আহমেদ নিলয় , নামে—কারণ শারীরিক ও হরমোনগত পরিবর্তনের ফলে সে এখন একজন স্বাভাবিক ছেলে।
রাফি বর্তমানে স্থানীয় বাসিন্দা রফিকুল ইসলাম ও হাজেরা বেগম দম্পতির সন্তান। পরিবার জানায়, শৈশব থেকে রুমি ছিল মেয়ে —চলাফেরা, কথাবার্তা, এমনকি পোশাকেও ছিল মেয়ে মানুষের বৈশিষ্ট্য। কিন্তু বয়স ১০ পার করার পর তার শরীরে ধীরে ধীরে পরিবর্তন লক্ষ্য করা যায়। কণ্ঠস্বর গভীর হয়ে আসে, শরীরের গঠন পুরুষদের মতো হয়ে ওঠে। এরপর চিকিৎসকের পরামর্শে বিভিন্ন মেডিকেল পরীক্ষা করানো হলে জানা যায়, সে একজন ইন্টারসেক্স (Intersex) বা জেনেটিক জটিলতায় আক্রান্ত, যার কারণে হরমোনের প্রভাবে সময়ের সঙ্গে সঙ্গে এমন পরিবর্তন ঘটে।
এই অস্বাভাবিক পরিবর্তনে পরিবার তো বটেই, পুরো গ্রামজুড়ে ছড়িয়ে পড়ে বিস্ময়ের ঢেউ। অনেকেই বলছেন, “এটা আল্লাহর অশেষ কুদরত। নিজের চোখে না দেখলে বিশ্বাস করা কঠিন হতো।”পরিবারের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী তার নতুন নাম রাখা হয় (রাফি) আহমেদ নিলয় , বর্তমানে সে একজন ছেলের মতো স্বাভাবিক জীবনযাপন করছে।
এই ঘটনা ঘাটাইলসহ সারাদেশে ব্যাপক আলোচনার জন্ম দিয়েছে। চিকিৎসা বিজ্ঞানের দৃষ্টিকোণ থেকে এটি একটি বিরল ও গুরুত্বপূর্ণ উদাহরণ, যা সামাজিক সচেতনতার জন্যও শিক্ষণীয়।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন: এটি জেনেটিক ও হরমোনজনিত এক বিশেষ অবস্থা। এরকম ক্ষেত্রে একজন মানুষের জৈবিক লিঙ্গ নির্ধারণে সময় ও চিকিৎসার প্রয়োজন হয়। পরিবার ও সমাজের সহানুভূতি এবং মানসিক সমর্থন এসব ক্ষেত্রে অত্যন্ত জরুরি।
সম্পাদকীয় বার্তা: এই ধরনের ঘটনাগুলো আমাদের চিকিৎসাবিজ্ঞান ও সমাজের সামনে নতুন প্রশ্ন ও চ্যালেঞ্জ তৈরি করে। তাই বিভ্রান্তি নয়, প্রয়োজন সহানুভূতি ও সঠিক তথ্য।