Dhaka 5:10 pm, Sunday, 27 July 2025

দুর্নীতির মামলায় বিএনপি নেতা এ্যানি চৌধুরীর খালাস

  • Reporter Name
  • Update Time : 08:03:18 am, Wednesday, 23 July 2025
  • 87 Time View

মোঃ শাহজাহান বাশার, সিনিয়র স্টাফ রিপোর্টার 

দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) দায়েরকৃত জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের মামলায় বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব ও সাবেক সংসদ সদস্য শহীদ উদ্দিন চৌধুরী এ্যানিকে বেকসুর খালাস দিয়েছেন আদালত।

বুধবার (২৩ জুলাই) ঢাকার বিশেষ জজ আদালত-৬ এর বিচারক মো. জাকারিয়া হোসেন এ রায় ঘোষণা করেন। রায়ে বলা হয়, আসামির বিরুদ্ধে আনা অভিযোগ রাষ্ট্রপক্ষ সন্দেহাতীতভাবে প্রমাণ করতে ব্যর্থ হয়েছে। ফলে শহীদ উদ্দিন চৌধুরী এ্যানিকে অভিযোগ থেকে সম্পূর্ণ খালাস দেওয়া হলো।

রায় ঘোষণার সময় এ্যানি চৌধুরী আদালতে উপস্থিত ছিলেন। এ সময় তার পক্ষে আদালতে উপস্থিত ছিলেন আইনজীবী মহি উদ্দিন চৌধুরী, জামাল হোসেন, তানজীম চৌধুরী এবং খায়রুল ইসলাম লিটন। এর আগে গত ১৬ জুলাই যুক্তিতর্ক উপস্থাপন শেষে আদালত রায়ের জন্য ২৩ জুলাই দিন ধার্য করেছিলেন।

এ বিষয়ে এ্যানির আইনজীবী অ্যাডভোকেট মহি উদ্দিন চৌধুরী সাংবাদিকদের বলেন, “আমরা শুরু থেকেই বলেছিলাম যে এই মামলা রাজনৈতিকভাবে উদ্দেশ্যপ্রণোদিত এবং ভিত্তিহীন। আদালত আমাদের বক্তব্য গ্রহণ করে এ্যানি চৌধুরীকে বেকসুর খালাস দিয়েছেন। দুদকের দায়েরকৃত এ মামলার এজাহার সূত্রে জানা যায়, ২০১৪ সালের ৯ অক্টোবর শহীদ উদ্দিন চৌধুরী এ্যানির বিরুদ্ধে রাজধানীর রমনা থানায় মামলা দায়ের করেন দুদকের উপ-পরিচালক মো. মঞ্জুর মোর্শেদ।

মামলায় অভিযোগ করা হয়, এ্যানি দুদকে দাখিলকৃত সম্পদ বিবরণীতে ১৩ লাখ ১৩ হাজার ৯৪০ টাকার সম্পদের তথ্য গোপন করেছেন এবং ১ কোটি ৪০ লাখ ৪২ হাজার ৬৭০ টাকার জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জন করেছেন বলে দুদকের অনুসন্ধানে উঠে আসে। তথ্য গোপনের অভিযোগের মধ্যে উল্লেখ ছিল, জমি রেজিস্ট্রেশন ফি বাবদ ৩ লাখ ১৩ হাজার ৯৪০ টাকা এবং লক্ষ্মীপুর জেলার কুশখালী এলাকার একটি স্কুলে অনুদান বাবদ ১০ লাখ টাকার হিসাব দেননি এ্যানি।

এছাড়া মামলার নথি অনুযায়ী, এ্যানির স্থাবর-অস্থাবর ও অপ্রদর্শিত সম্পদ মিলিয়ে মোট ৩ কোটি ৭৫ লাখ ৩৫ হাজার ২৬৬ টাকার সম্পদের হিসাব পাওয়া যায়। যার মধ্যে ৫০ লাখ টাকা তিনি দায় হিসেবে উল্লেখ করেন। ফলে নিট সম্পদ দাঁড়ায় ৩ কোটি ২৫ লাখ ৩৪ হাজার ২৫৭ টাকা। ২০১৩ সালের ৩০ জুন দেওয়া সম্পদ বিবরণীতে তার সম্পদের পরিমাণ ছিল ১ কোটি ৭৬ লাখ ৯১ হাজার ৫৮৭ টাকা। এসব তথ্যের অসামঞ্জস্যতার ভিত্তিতে মামলাটি গঠিত হয়।

২০১৬ সালের ২৪ মে এ্যানির বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠনের মাধ্যমে বিচার শুরু হয়। পরে হাইকোর্ট মামলার কার্যক্রম স্থগিত করে রুল জারি করলেও, ২০১৯ সালের ১৪ মে তা প্রত্যাহার করে ছয় মাসের মধ্যে বিচার শেষের নির্দেশ দেন। মামলার বিচার চলাকালে রাষ্ট্রপক্ষ মোট ১২ জন সাক্ষী উপস্থাপন করলেও ৯ জন সাক্ষ্য দেন। রাষ্ট্রপক্ষ আসামির বিরুদ্ধে উত্থাপিত অভিযোগ যথাযথভাবে প্রমাণ করতে ব্যর্থ হওয়ায় আদালত রায় দেন আসামির পক্ষে।

বিএনপির নেতাকর্মীরা এ রায়কে ন্যায়বিচারের প্রতিফলন হিসেবে দেখছেন এবং রাজনৈতিকভাবে হয়রানির অভিযোগের বিরুদ্ধে তাদের অবস্থানকে শক্তিশালী প্রমাণ হিসেবে তুলে ধরছেন। দীর্ঘ বিচারিক প্রক্রিয়ার পর অবশেষে আদালতের রায়ে বিএনপি নেতা শহীদ উদ্দিন চৌধুরী এ্যানি এই মামলায় খালাস পেলেন। আদালতের এই রায়কে কেন্দ্র করে রাজনৈতিক অঙ্গনে নতুন করে আলোচনা শুরু হয়েছে।

Tag :
সম্পাদক ও প্রকাশক : আবুল হাসান

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

জনপ্রিয়

‎৩১ দফা বাস্তবায়নে জয়পুহাটে বিএনপির নেতা এম এ গফুর মন্ডলের গণসংযোগ ও পথসভা 

দুর্নীতির মামলায় বিএনপি নেতা এ্যানি চৌধুরীর খালাস

Update Time : 08:03:18 am, Wednesday, 23 July 2025

মোঃ শাহজাহান বাশার, সিনিয়র স্টাফ রিপোর্টার 

দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) দায়েরকৃত জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের মামলায় বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব ও সাবেক সংসদ সদস্য শহীদ উদ্দিন চৌধুরী এ্যানিকে বেকসুর খালাস দিয়েছেন আদালত।

বুধবার (২৩ জুলাই) ঢাকার বিশেষ জজ আদালত-৬ এর বিচারক মো. জাকারিয়া হোসেন এ রায় ঘোষণা করেন। রায়ে বলা হয়, আসামির বিরুদ্ধে আনা অভিযোগ রাষ্ট্রপক্ষ সন্দেহাতীতভাবে প্রমাণ করতে ব্যর্থ হয়েছে। ফলে শহীদ উদ্দিন চৌধুরী এ্যানিকে অভিযোগ থেকে সম্পূর্ণ খালাস দেওয়া হলো।

রায় ঘোষণার সময় এ্যানি চৌধুরী আদালতে উপস্থিত ছিলেন। এ সময় তার পক্ষে আদালতে উপস্থিত ছিলেন আইনজীবী মহি উদ্দিন চৌধুরী, জামাল হোসেন, তানজীম চৌধুরী এবং খায়রুল ইসলাম লিটন। এর আগে গত ১৬ জুলাই যুক্তিতর্ক উপস্থাপন শেষে আদালত রায়ের জন্য ২৩ জুলাই দিন ধার্য করেছিলেন।

এ বিষয়ে এ্যানির আইনজীবী অ্যাডভোকেট মহি উদ্দিন চৌধুরী সাংবাদিকদের বলেন, “আমরা শুরু থেকেই বলেছিলাম যে এই মামলা রাজনৈতিকভাবে উদ্দেশ্যপ্রণোদিত এবং ভিত্তিহীন। আদালত আমাদের বক্তব্য গ্রহণ করে এ্যানি চৌধুরীকে বেকসুর খালাস দিয়েছেন। দুদকের দায়েরকৃত এ মামলার এজাহার সূত্রে জানা যায়, ২০১৪ সালের ৯ অক্টোবর শহীদ উদ্দিন চৌধুরী এ্যানির বিরুদ্ধে রাজধানীর রমনা থানায় মামলা দায়ের করেন দুদকের উপ-পরিচালক মো. মঞ্জুর মোর্শেদ।

মামলায় অভিযোগ করা হয়, এ্যানি দুদকে দাখিলকৃত সম্পদ বিবরণীতে ১৩ লাখ ১৩ হাজার ৯৪০ টাকার সম্পদের তথ্য গোপন করেছেন এবং ১ কোটি ৪০ লাখ ৪২ হাজার ৬৭০ টাকার জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জন করেছেন বলে দুদকের অনুসন্ধানে উঠে আসে। তথ্য গোপনের অভিযোগের মধ্যে উল্লেখ ছিল, জমি রেজিস্ট্রেশন ফি বাবদ ৩ লাখ ১৩ হাজার ৯৪০ টাকা এবং লক্ষ্মীপুর জেলার কুশখালী এলাকার একটি স্কুলে অনুদান বাবদ ১০ লাখ টাকার হিসাব দেননি এ্যানি।

এছাড়া মামলার নথি অনুযায়ী, এ্যানির স্থাবর-অস্থাবর ও অপ্রদর্শিত সম্পদ মিলিয়ে মোট ৩ কোটি ৭৫ লাখ ৩৫ হাজার ২৬৬ টাকার সম্পদের হিসাব পাওয়া যায়। যার মধ্যে ৫০ লাখ টাকা তিনি দায় হিসেবে উল্লেখ করেন। ফলে নিট সম্পদ দাঁড়ায় ৩ কোটি ২৫ লাখ ৩৪ হাজার ২৫৭ টাকা। ২০১৩ সালের ৩০ জুন দেওয়া সম্পদ বিবরণীতে তার সম্পদের পরিমাণ ছিল ১ কোটি ৭৬ লাখ ৯১ হাজার ৫৮৭ টাকা। এসব তথ্যের অসামঞ্জস্যতার ভিত্তিতে মামলাটি গঠিত হয়।

২০১৬ সালের ২৪ মে এ্যানির বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠনের মাধ্যমে বিচার শুরু হয়। পরে হাইকোর্ট মামলার কার্যক্রম স্থগিত করে রুল জারি করলেও, ২০১৯ সালের ১৪ মে তা প্রত্যাহার করে ছয় মাসের মধ্যে বিচার শেষের নির্দেশ দেন। মামলার বিচার চলাকালে রাষ্ট্রপক্ষ মোট ১২ জন সাক্ষী উপস্থাপন করলেও ৯ জন সাক্ষ্য দেন। রাষ্ট্রপক্ষ আসামির বিরুদ্ধে উত্থাপিত অভিযোগ যথাযথভাবে প্রমাণ করতে ব্যর্থ হওয়ায় আদালত রায় দেন আসামির পক্ষে।

বিএনপির নেতাকর্মীরা এ রায়কে ন্যায়বিচারের প্রতিফলন হিসেবে দেখছেন এবং রাজনৈতিকভাবে হয়রানির অভিযোগের বিরুদ্ধে তাদের অবস্থানকে শক্তিশালী প্রমাণ হিসেবে তুলে ধরছেন। দীর্ঘ বিচারিক প্রক্রিয়ার পর অবশেষে আদালতের রায়ে বিএনপি নেতা শহীদ উদ্দিন চৌধুরী এ্যানি এই মামলায় খালাস পেলেন। আদালতের এই রায়কে কেন্দ্র করে রাজনৈতিক অঙ্গনে নতুন করে আলোচনা শুরু হয়েছে।